করোনাভাইরাসের টিকার আর কতদূর?

বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের নাম এখন নভেল করোনাভাইরাস; আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে এখন ৩৭ হাজারের বেশি।

নতুন ধরনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য সুনির্দিষ্ট ওষুধ এখনও নেই; ফলে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের টিকা পাওয়ার আশায় আছে বিশ্ববাসী।

তিন মাস আগে চীনে সংক্রমণ ঘটার পর বিশ্বে যখন ছড়াতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই টিকা আবিষ্কারে নেমে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীনের মতো দেশগুলো।

কোভিড-১৯ রোগের প্রতিষেধক কে আগে বার করবে, সেই দৌড়ে আছে তারা এখনও। মানুষের শরীরে কী প্রভাব হয়, তা দেখতে এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের আবিষ্কৃত টিকার নিরীক্ষায় নেমেছে।

কিন্তু গবেষকরা কতটুকু সফল হতে পেরেছেন নতুন এই ভাইরাসটির প্রতিষেধক তৈরিতে? আর কত দিনই বা লাগবে টিকা প্রয়োগ করে মানুষের মৃত্যুর মিছিল থামাতে?যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ৩৫টির প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ টিকা তৈরির চেষ্টা জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে এক ধাপ পেরিয়ে চারটি প্রতিষ্ঠান প্রাণীদেহে এই প্রতিষেধক প্রয়োগের নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।

মানুষের উপর প্রথম এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়েছে বোস্টনের বায়োটেকনোলোজি কোম্পানি মডার্না থেরাপিউটিকস।

গবেষণার এই ত্বরিত গতির জন্য চীনের একটি ধন্যবাদ প্রাপ্য বলে জানাচ্ছে গার্ডিয়ান। কারণ তারাই শুরুতে সার্স-সিওভি-২ ভাইরাসটির জিনোমের নমুনা নিয়ে তা জানিয়েছিল সবাইকে।গত জানুয়ারিতে চীনের কাছ থেকে এই ভাইরাসের জিনোম নমুনা মেলার পর থেকেই বিশ্বের গবেষণাগারে শুরু হয় নভেল করোনাভাইরাসের অনুলিপি তৈরির চেষ্টা। একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করে কীভাবে এই ভাইরাস মানুষের শরীরের কোষগুলোকে আক্রান্ত করে; যার কারণে মানুষ অসুস্থ ও মৃত্যুঝুঁকিতেও পড়ে।

কোভিড-১৯ প্রতিষেধক তৈরিতে অর্থ জোগান দিচ্ছে অসলোভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সেপি)।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গার্ডিয়ানকে বলেন, “আর সব করোনাভাইরাসে টিকা কীভাবে তৈরি করা যায়, এই চিন্তা করেই দ্রুতগতিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে।”

২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত চীনে সার্স ও ২০১২ সালে সৌদি আরবে মার্সের প্রাদুর্ভাবের কারণও এক ধরনের করোনাভাইরাসই।

সার্স ও মার্সের পর প্রতিষেধক তৈরির কাজ শুরু হলেও রোগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই এই গবেষণা থেমে যায় বলে জানাচ্ছে গার্ডিয়ান।

মেরিল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্স বলছে, ওই সময়ে তৈরি টিকাগুলো এখন মানুষের শরীরে পরীক্ষার জন্য প্রয়োগ করা সম্ভব।

Ad