‘নিজের কাজের প্রাপ্তিতে সন্তুষ্ট থাকতে হবে’
এ প্রজন্মের জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার নাহরীন চৌধুরী। তিনি খুব অল্প সময়েই বাংলাদেশের ফ্যাশন জগতে গড়ে নিয়েছেন নিজের শক্ত অবস্থান। একের পর এক নতুন ডিজাইনা দিয়েই ফ্যাশন হাউস ও ক্রেতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ওকোড এনার্জিপ্যাকের হেড অব ইনোভেশন হিসেবে কর্মরত আছেন।
ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে ফ্যাশন ডিজাইনার নাহারিন চৌধুরী বলেন, ‘সফল হওয়ার সহজ উপায় বলে কোন কিছু নেই। সততার সাথে কাজ করতে হবে, সব জায়গায় নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। কাজকে ভয় পাওয়া যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা সত্যি নিয়ে সামনে আগাতে হবে।’
ক্যারিয়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম নিজেকে কী করতে হবে? জানতে চাইলে নাহারিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার হিসেবে প্রত্যেকটি মানুষকে ক্যারিয়ার বেছে নেয়ার আগে খুব সহজেই পাঁচটি প্রশ্ন নিজেকে নিজের করতে হবে। যে কাজে আমি করতে যায় সেই কাজটি যদি আমাকে শান্তি না দেয় তাহলে সে কাজটি আমি কখনোই কন্টিনিউ করতে পারবোনা। কাজটির জন্য যদি আমি দক্ষ না হয় তাহলে আমি কোন ভাবেই টিকে থাকতে পারবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এমন কোন কাজ কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলাম যা আমাদের সমাজ এটাকে সহজভাবে মেনে নেয় না, ওই কাজটি করা খুব কঠিন হয়ে পরে। অনেক সময় আমরা যে কাজটি করতে চাই ওই কাজের জন্য আমাদের যতটুকু সময় প্রয়োজন, সেই সময়টুকু না আমরা সঠিকভাবে দিতে পারি না। আবার অনেক সময় আমরা ক্যারিয়ার হিসেবে যে পথটি বেছে নেই সে কাজটি হয়তো মানসিক শান্তি দেয় কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে আমরা সন্তুষ্ট থাকিনা।’
আপনি কতটা সফল? উত্তরে নাহারিন চৌধুরী বলেন, ‘সফলতা কথাটা অনেক ভারী। আমি এখনো নিজেকে সফল ভাবি না। হয়তো সামনে আমি আরো নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করব, তখন হয়তো আমি ক্যারিয়ার নিয়ে আরও অনেক কিছু শেয়ার করতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘খুব ছোট্ট করে যদি বলতে হয়, তাহলে আমি যেটা বলবো- নিজের কাজকে ভালবাসতে হবে, নিজেকে ভালবাসতে হবে, যে কাজই করি সেই কাজের প্রাপ্তিতে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।’
এবারের ঈদের পরিকল্পনা কী? জানতে চাইলে নাহারিন চৌধুরী বলেন, ‘কেউই আমরা খুব মানসিক প্রশান্তিতে নেই। এই করোনাকালীন সময়ে ঈদ কিন্তু আগের মত খুব স্বাভাবিক না। অর্থনৈতিক দিক থেকে হোক অথবা মানসিক দিক থেকে হোক, কেউই কিন্তু আমরা স্বাভাবিক অবস্থানে নেই। যেহেতু আমি একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সাথে আছি। আমাকে এই সব কিছুকে মাথায় রেখেই এবারের ঈদ কালেকশনাটা ভাবতে হয়েছে। শুধুমাত্র খুব সুন্দর ডিজাইন করাই কিন্তু ডিজাইনার এর সার্থকতা না, ডিজাইনটি অথবা পণ্যটি একজন ক্রেতা কত সহজে সেটাকে গ্রহণ করছে, এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের ঈদ কালেকশনটি এসব কিছুকে মাথায় রেখেই করা হয়েছে। খুব সিম্পল ডিজাইন, আরামদায়ক কাপড়, খুব সহজে ধোয়ার যোগ্য, এবং সাধ্যের মধ্যে প্রত্যেকটি পণ্যকে রাখা হয়েছে। যেহেতু আমরা বেশ অনেকদিন ঘরের ভিতরে ছিলাম, প্রকৃতি থেকে বেশ দূরে এই কারণে এবারের কালেকশনটি নেচারকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে প্রত্যেকটি ক্রেতাকে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাওয়ার। ডিজাইনে এবং ব্র্যান্ডিংয়ে চেষ্টা করা হয়েছে প্রকৃতির ছাপ দেয়ার।’
সাবধানতা বজায় রেখে আনন্দের সাথে কাটুক প্রত্যেকটি মানুষের ঈদ জানিয়ে নাহারিন চৌধুরী বলেন, ‘এই করোনাকালীন সময়ে জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আশা করি সামনের দিনগুলো আগের মত স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এবারের ঈদটি হয়তো একটু ভিন্ন হবে, কিন্তু আনন্দ হয়তো কম হবেনা। যেকোনো পরিস্থিতিতে জীবনকে উপভোগ করতে হবে, সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি সবার ঈদ অনেক ভালো কাটবে।’