অক্টোবরে শুটিং শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’র
আফজালুর ফেরদৌস রুমন : নাম ঘোষণার সময় থেকেই বাংলাদেশের প্রথম ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা ‘অপারেশন সুন্দরবন’ নিয়ে আলাদা একটি আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের মধ্য। এটি নির্মিত হচ্ছে জলদস্যু নির্মূলে সুন্দরবনে র্যাবের অভিযান নিয়ে।
বিশাল ক্যানভাসের ভিন্নধর্মী কনটেন্ট, শিল্পী তালিকা এবং পরিচালক হিসেবে দীপংকর দীপন সব মিলিয়েই ‘অপারেশন সুন্দরবন’ আলোচনার শীর্ষে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর খুলনার মুন্সিগঞ্জে শুটিং শুরু হয় সিনেমাটির।
তার আগে ‘সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে ১লা নভেম্বর সিনেমাটির একটি পোস্টার প্রকাশিত হয়। এর পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিল শিল্পী পরিচিতি অনুষ্ঠানের। পোষ্টারটি প্রকাশের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত নির্মাতা দীপংকর দীপনের নতুন সিনেমা ‘অপারেশন সুন্দরবন’ এর শুটিং প্রায় শেষের পথে ছিলো। মাঝে করোনা পরিস্থিতির কারনে অন্য সব কিছুর বন্ধ ছিলো বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। তারই ধারাবাহিকতায় বন্ধ ছিলো সিনেমার শ্যুটিং, ডাবিং সহ সকল কাজ।
তবে এখন আস্তে আস্তে কাজে ফিরছেন শিল্পী এবং কলাকুশলীরা। সকল নিয়মনীতি মেনে সচেতন থেকেই পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েই কাজে ফিরছেন সবাই। এরই ধারাবাহিকতায় গুনী নির্মাতা দীপংকর দীপন জানিয়েছেন আগামী অক্টোবর থেকে আবারো শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমার শ্যুটিং।
দুই ধাপে প্রায় ৩২ দিনের শুটিং শিডিউলের মাধ্যমে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমার খুলনা অঞ্চলের শুটিং শেষ হয়। গত ১১ই মার্চ খুলনার মংলার জয়মনি এলাকায় সিনেমার শুটিংয়ের মধ্য দিয়েই এই বিগ বাজেটের বিশাল ক্যানভাসের সিনেমার শ্যুটিং প্রায় সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিলো।
পরিচালক জানিয়েছিলেন ঢাকায় অল্প কিছুদিন শুটিং করলেই সিনেমাটির শুটিং শেষ হবে। তবে এরই মাঝে করোনার হানার কারনে শিডিউল মাফিক সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি সিনেমার কাজ। সিনেমাটির শ্যুটিং শুরুর আগে এক বছরের বেশি সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছেন পরিচালক ও তার টিম।
সুন্দরবন থেকে জলদস্যু মুক্ত করার অভিযান নিয়ে সিনেমার গল্প। তবে সিনেমার গল্পে দেশের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ নিয়েও কিছু অংশ থাকবে। চলচ্চিত্রটির কাছের একটি সূত্র জানিয়েছে, সিনেমার শুটিংয়ে প্রায় ১০০ জন অভিনয়শিল্পী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্য।
প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন কাজ করেছেন সিনেমার জন্য। শুটিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে দুটি বড় জলজাহাজ, সাতটি স্পিডবোট, ছয়টি লঞ্চ, দুটি হেলিকপ্টারসহ আরও অনেক কিছু। উল্লেখ্য গল্পের চাহিদার কারনে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমাতে অভিনয় করেছেন এলাকাবাসীও।
সিনেমার শুটিং হয়েছে গভীর সুমদ্র থেকে শুরু করে সুন্দরবনের ভেতরে, হিরণ পয়েন্টে। এ ছাড়া কালিরচর, দুবলার চর, আলোর চর, মেহের আলীর চর, ডিমের চর, লক্ষ্মীর চরসহ ওই অঞ্চলের নানা জায়গায় শুটিং হয়েছে সিনেমাটির।
দীপংকর দীপন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘কাদাপানির মধ্যে শুটিং করেছি আমরা। অনেক সময় শিল্পীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শুটিংয়ের সময় সুমদ্রের জোয়ার কখনো অনুকূলে ছিল, কখনো ছিল না। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুটিং করতে হয়েছে। জলদস্যু ধরার দৃশ্যের জন্য গভীর বনে ঢোকার পর হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় শুটিং না করে ফিরে আসতে হয়েছে। এছাড়া ‘অনেক সময় এমন দুর্গম এলাকায় যেতে হয়েছে, যেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। তিন-চার দিন পরপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি আমরা।’
এই সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন সিয়াম আহমেদ, নুসরাত ফারিয়া, রোশান, রিয়াজ, তাসকিন আহমেদ, মনোজ প্রামানিক, সামিনা বাশার, দীপু ইমাম সহ অনেকে। এতে সিয়াম, রোশান ও রিয়াজকে র্যাব কর্মকর্তার চরিত্রে দেখা যাবে।
নুসরাত ফারিয়া অভিনয় করবেন একজন বাঘ গবেষক হিসেবে। এছাড়া কলকাতার দর্শনা বণিক, তুয়া চক্রবর্তীকেও দেখা যাবে এই সিনেমায়। সবকাজ শেষ করে শ্রীঘই মানসম্মত সুস্থ ধারার বানিজ্যিক সিনেমা হিসেবে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সেটাই কামনা।