নিজেকে নিজেই প্রমান করে যাচ্ছেন তানভীর
আফজালুর ফেরদৌস রুমন : করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় তিনমাসের বেশি সময় পরিবারের সদস্যদের সাথে বাসায় কাটানোর পরে এই সময়ের জনপ্রিয় এবং নির্ভরশীল অভিনেতা গোলাম কিবরিয়া তানভীর আবারো ব্যস্ত হচ্ছেন অভিনয়ে। বরাবরই কোয়ালিটিকে প্রাধান্য দেয়া তানভীর এই মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে টানা কাজ করে যাচ্ছেন বিগত এক দশক ধরে। এতোটা সময় চাহিদা ধরে রেখে এই ইন্ডাস্ট্রিতে একটানা কাজ করে যাওয়াটাই একটা বিশাল প্রাপ্তি বলে মনে করেন তিনি।
গত বছর ধারাবাহিক ‘খলনায়ক’ তাকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপরে বেশকিছু আলোচিত নাটকে দেখা যায় এই দক্ষ অভিনেতাকে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্মাতা হাবীব শাকিলের পরিচালনায় এই সময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘পরের মেয়ে’ নাটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাচ্ছে তাকে। দিলারা জামান, ইন্তেখাব দিনার, প্রভা, টয়া সহ আরো অনেকের সাথে তানভীরের অভিনয় প্রশংসা পাচ্ছে।
সোম ও মঙ্গলবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে এনটিভিতে প্রচার হচ্ছে ধারাবাহিকটি। আরটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে তার অভিনীত আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তোলপাড়’। এছাড়া তানভীর এরই মধ্যে শেষ করেছেন গোলাম সোহরাব দোদুল পরিচালিত ‘জীবন এত ছোট কেন’ নাটকের কাজ। এই নাটকে তার চরিত্র এবং অভিনয় নতুন করে সবার মন জয় করবে বলেই আশা করেন তিনি।
গত ঈদে তানভীর হাজির হয়েছেন বেশকটি ভিন্নধর্মী নাটক নিয়ে। এর মধ্যে অরণ্য পাশার ‘ব্যাচেলর ফ্যামিলি’ ও রাকেশ বসুর ‘অনেক ভালোবাসি’, সজীব মাহমুদের ‘রকি দ্যা গ্রেট’, ‘বোকা প্রেম’ ও ‘রুমমেট আবশ্যক’, এমদাদুল হক খানের পরিচালনায় ‘সেদিন বৃষ্টি ছিল’, অঞ্জন আইচের ‘লকডাউন চোর’ বেশ ভালোই প্রশংসা এবং জনপ্রিয়তা পায়।
তানভীর জানান, ‘ঈদে প্রায় ১৩/১৪টি নাটকে অভিনয় করেছি। যদিও আরো কিছু কাজ করার কথা ছিলো তবে করোনা পরিস্থিতির কারনে অন্য সবার মতো আমারো কাজ কম করা হয়েছে। তবে এখন আস্তে আস্তে কিছুটা স্বাভাবিক ভাবেই কাজে ফিরছেন সবাই। তাই বেশকিছু প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি।
কিছুদিন আগে সঞ্জয় সমাদ্দারের পরিচালনায় ‘শিকল’ নামের একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন তিনি। বিপরীতে আছেন এই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। ভিন্নধর্মী কনটেন্ট নিয়ে নির্মিত এই ওয়েব সিরিজের গল্প, নির্মান এবং অভিনয় সবার ভালো লাগবে বলেই আশাবাদী তিনি।
সম্প্রতি কাজ করলেন ‘ভাইয়ের কিসমত খারাপ’ নামক একটি পুরান ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত একটি নাটকে। মমর রুবেলের স্ক্রিপ্ট এবং সজীব মাহমুদের পরিচালনায় নাটকটি প্রযোজনা করেছেন সাহেদ চৌধুরী। এই নাটকে নাম ভূমিকায় আছেন গোলাম কিবরিয়া তানভীর, সাথে আছেন তানিয়া বৃষ্টি, তানভীর মাসুদ, সিয়াম নাসির, আনোয়ার হোসাইন সহ আরো অনেকে।
পুরান ঢাকার এক যুবক যে কিনা এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থাকে। যেকোনো ঝগড়া বিবাদের মীমাংসা করে দেয় কিন্তু ভালোবাসার অভিব্যক্তির সময় কেনো যেনো বারবার পিছিয়ে যায়। যেকোন বিপদে সাহসের সাথে এগিয়ে গেলেও ভালোবাসার কথা বলতে গেলেই কেনো যেনো এক ধরনের ভয় আর হীনমন্যতা এসে ভর করে এমন এক যুবকের ভূমিকায় তাকে দেখা যাবে।
ইতিমধ্যে নাটকের শ্যুটিং চলাকালীন সময়ে কিছু স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে দর্শকদের কাছে তার লুক প্রশংসা পায়। এই প্রথমবার ঢাকাইয়া এক যুবকের চরিত্রে ঢাকাইয়া ভাষায় অভিনয় করা প্রসঙ্গে চট্রগ্রামের ছেলে তানভীর জানান, সব মিলিয়েই এই নাটকটি আমার কাছে একটা অন্যরকম অভিজ্ঞিতা।
পুরান ঢাকায় বিভিন্ন লোকেশনে শ্যুটিং করার ব্যাপারটাও অন্যরকম ছিলো। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা এবং আতিথেয়তা তাকে মুগ্ধ করেছে। আর পরিচালক থেকে শুরু করে সহশিল্পীরা এবং ইউনিটের প্রত্যেকের সহযোগিতা কাজটি সহজ করে দিয়েছে।
সময়ের জনপ্রিয় নির্মাতা রায়হান রাফির হাত ধরেই চলচ্চিত্রেও অভিষেক হতে যাচ্ছে তানভীরের। বহুল আলোচিত ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমায় সিয়াম, মাহিয়া মাহী, জান্নাতুল পিয়া, উর্বীর সাথে তাকেও দেখা যাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির নানা অজানা গল্প নিয়ে এই সিনেমাটির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য লিখেছেন শাহজাহান সৌরভ, প্রযোজনায় আছেন ডিজাইনার পিয়াল হোসেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সিনেমার বাকি অংশের শ্যুটিং শুরু হবে।
সবমিলিয়ে বলা যায় ক্যারিয়ারে এই সময়ে বেশ ভালো সময় পার করছেন তিনি। দক্ষ এবং আলোচিত নির্মাতাদের মাধ্যমে ভিন্নধর্মী বেশকিছু কাজে তানভীর তার দক্ষতা আর চেস্টা দিয়ে প্রমান করে যাচ্ছেন নিজেকে। শুভ কামনা রইলো তার আগামী কাজগুলোর জন্য।