‘মাইনকার চিপায়’ নতুনত্ব এবং ভিন্নতা

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : এক রাতের গল্প নিয়ে জমজমাট থ্রিলার ‘মাইনকার চিপায়’ উপহার দিলেন নির্মাতা আবরার আতাহার। পুরো গল্পে মাত্র তিনটি চরিত্র। একজন ড্রাগ ডিলার, একজন ভুয়া পুলিশ এবং একজন মাদকাসক্ত তরুন।

তিনজনই একে অন্যকে সুযোগ পেলেই ‘মাইনকার চিপায়’ ফেলে টাইপ অবস্থা। তিনজনের তিন ধরনের চিন্তা আর সেই সময়ের বাস্তবতা নিয়েই গল্পের বাঁক বদল মুগ্ধ করবে। অভিনয়ে আফরান নিশো, শ্যামল মাওলা এবং শরিফুল রাজ।

বিনোদনের নতুন মাধ্যম এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এমনই এক ভারতীয় প্ল্যাটফর্ম ‘জি-ফাইভ’ এ গতকাল রাতে রিলিজ দেয়া হয়েছে আমাদের দেশীয় কনটেন্ট ‘মাইনকার চিপায়’। এটি ফ্রিতেই দেখা যাচ্ছে জাস্ট অ্যাপটি ডাউনলোড করে।

রিলিজ দেবার পরে অনেকের কাছ থেকেই প্রশংসা পাচ্ছে ‘মাইনকার চিপায়’। যদিও বিভিন্ন পেজ বা গ্রুপে রিভিউতে গল্প বা চিত্রনাট্য নিয়ে অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তবে সব মিলিয়ে একটি বাংলাদেশী কনটেন্ট হিসেবে নির্মানের মুন্সিয়ানা, এক রাতের গল্পে জমজমাট থ্রিলার আবহ ধরে রাখা, অসাধারন সাউন্ড সিস্টেম এবং দক্ষ অভিনয় দিয়ে অনেক প্রচলিত ধারা ভেঙেছে ‘মাইনকার চিপায়’ একথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

এমনকি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট বা নানা ঘাটতি সত্ত্বেও টেকনিক্যাল নানা বিষয় দক্ষতার সাথে তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাটোগ্রাফি, কালার সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট ‘মাইনকার চিপায়’।

পুরোটাই থ্রিলার গল্প। তবে হালকা কমেডির স্বাদ পাওয়া গেছে মাঝে মাঝে। বিশ্বমানের ওয়েব কনটেন্ট বা নির্মানের স্বাধীনতা মানেই যে সাহসী দৃশ্য বা বেড সিন রাখা নয় তার উদাহরন হিসেবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে ‘মাইনকার চিপায়’ কে এগিয়ে রাখবো। এমনকি এই কনটেন্টে নেই কোনো নারী অভিনয় শিল্পী।

নেই কারন গল্পেই এমন কোন কিছুর প্রয়োজন নাই। নির্মানের মুন্সিয়ানা বলি বা গল্প বলার স্ট্যাইল আমাদের দেশেও এমন কিছু যে করা যায় এবং নতুন একটা প্রজন্ম যে প্রচলিত কিছু কমন গন্ডি থেকে বেশ ভালোভাবেই বের হয়ে চমকে দিতে পারেন তার প্রমান ‘মাইনকার চিপায়’। কিছু কমতি হয়তো আছে তবে ভিন্নধর্মী এবং নতুন কিছু উপহার দেবার কারনে আবরার আতাহার এবং তার টিমকে ধন্যবাদ দেয়াই যায়।

অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই। শ্যামল মাওলা প্রতিভাবান। তবে ঠিকঠাক মতো তাকে কাজে লাগালে তিনি যে অসাধারন অভিনয় করতে পারেন তার প্রমান ‘মাইনকার চিপায়’। একই কথা বলতে-লিখতে হয় শরীফুল রাজের বেলায়। প্রথম সিনেমা ‘আইসক্রিম’ দিয়েই নিজের দক্ষতার ঝলক দেখিয়েছেন তিনি।

কিছুদিন আগে ‘ইনফিনিটি’ ওয়েব সিরিজেও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। ‘মাইনকার চিপায়’ ও নিজের সেরাটাই দিয়েছেন। এবং বিগত কয়েক বছর ধরেই একজন আফরান নিশো আমাদের মুগ্ধ করেই চলেছেন। তাকে আরো কাজে লাগাতে হবে নির্মাতাদের এবং গল্পকারদের। অসাধারন গুনী এই অভিনেতা সামনে আরো ভিন্নধর্মী কাজ দিয়ে চমকে দিবেন আমাদের এটাই কামনা।

Ad