‘সঠিক প্ল্যাটফর্ম পাওয়াটা কিন্তু অনেক বেশি জরুরি’ (শেষ পর্ব)

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : এই প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্য কার কার অভিনয় ভালো লাগে জানতে চাওয়া হলে খুব দৃঢ় কন্ঠে তিনি বলেন, এই প্রজন্মের অনেকেই খুব ভালো কাজ করছে। তবে সেইভাবে বলতে গেলে সিয়াম আহমেদ এবং মেহজাবিন আমাকে মুগ্ধ এবং অবাক করেছে তাদের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে। এছাড়াও শবনম ফারিয়া এবং মনোজের অভিনয় ভালো লাগে আমার। বর্তমানে আমাদের নাটকের মান ও স্ক্রিপ্ট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়।

দর্শকরা দেশীয় চ্যানেল বিমুখ, এছাড়াও আরো হাজারটা সমস্যা নিয়েই কাজ তুলে আনতে হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই তিনিও মানসম্মত কাজের প্রতি আরো বেশি মনোযোগী। তিনি জানান, ভালো ও গ্রহণযোগ্য কাজের জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রয়োজন। ভালো স্ক্রিপ্ট, সিনসিয়ার পারফর্মার এবং অভার অল পুরো টিমের যদি কাজটার প্রতি ভালোবাসা থাকে তাহলে অটোমেটিক প্রোডাকশানটাও ভালো হবে। আমি এই নীতিতেই কাজ করি। কোয়ান্টিটির চেয়ে সবসময় কোয়ালিটি আমার কাছে ইম্পোর্টেন্ট।

সাফল্য পাবার পরেও যারা শুরুর সময়টাতে পাশে থাকে বা আস্থা বাড়ানোর জায়গায় অনুপ্রেরণা দেন তাদেরকে কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয় বলে জানান চয়নিকা চৌধুরী। এই সময়ে এসে অনেকেই সেটা ভুলে যান যা শিল্পী সত্ত্বার মধ্যে পড়েনা বলেই মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন- আসলে ট্যালেন্ট বা দক্ষতা অনেকের মাঝেই কিন্তু কমবেশি থাকে। কিন্তু সেই ট্যালেন্টটা তুলে ধরার জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম পাওয়াটা কিন্তু অনেক বেশি জরুরি।

তাই শিকড় বা শুরুটা আমাদের কারোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কারন আমাদের ক্যারিয়ারের শুরু বা সাফল্যের সিড়িতে উঠার সময়টা যাদের মাধ্যমে তাদের ঋন শোধ হবার নয়। এই জেনারেশনের অনেকের মধ্যেই এই গুন বা বিনয়ী আচরণ আমরা দেখতে পাইনা এটা অনেক সময় কষ্ট দেয়। তবে নিজের জায়গায় স্বচ্ছ থাকাটা মানুষ হিসেবে খুবই দরকার বলে আমার মনে হয়।

সব কিছু ঠিক থাকলে বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম মানে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও এরই মাঝে অভিষেক হয়ে যেতো তার। করোনা পরিস্থিতির কারনে সিনেমা মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়। আজ প্রযোজনা সংস্থা সুত্রে জানানো হয়েছে আগামী ১১ই ডিসেম্বর সারাদেশে মুক্তি পাবে ‘বিশ্বসুন্দরী’।

চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত এই সিনেমা এরই মাঝে সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেছে। রুম্মান রশীদ খানের লেখা গল্পে সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, পরীমনি, চম্পা, মনিরা মিঠু, খালেদ মোহাম্মদ সহ আরো অনেকে।

উল্লেখ্য, এই সিনেমার মধ্য দিয়ে সিয়াম এবং পরীমনি জুটি বেধেছেন প্রথমবারের মতো। এরই মধ্য ‘তুই কি আমার হবি রে’ শিরোনামের গানটিও প্রশংসা পাচ্ছ সকলের। তিনকোটির বারের বেশি ইউটিউবে দেখা হয়েছে এই শ্রুতিমধুর গানটা। সান মিউজিক এন্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেডের প্রতিও কৃতজ্ঞ তিনি। বিশেষ করে অজয় কুমার কুন্ডু এবং আরিফুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই বলে মনে করেন এই জনপ্রিয় নির্মাতা।

চয়নিকা চৌধুরী সামনের দিনগুলিতে আরো ভালো এবং মানসম্মত কাজ উপহার দিয়ে নিজেকে নিয়ে যাবেন সফলতার শিখরে এমনটাই আশা রইলো। সম্প্রতি নিজের ৪০০টি নাটক নির্মান উপলক্ষে একটি ভিডিও বার্তায় তিনিও এমন কথাই বলেছেন। সামনের কাজ গুলোতে আরো বেশি যত্নশীল হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এই লম্বা সময়টা পাড়ি দেবার পথে পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা কাছের মানুষের বাইরে তার বিভিন্ন প্রযোজক, শিল্পী-কলাকুশলী, টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে তার সাথে জড়িত সকল মানুষের প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে চয়নিকা চৌধুরী বলেন, এই পর্যন্ত আসতে সাংবাদিক ভাই-বোনদেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে যা অনস্বীকার্য। সদা হাস্যজ্বল এবং বিনয়ী এই জনপ্রিয় এবং দক্ষ নির্মাতার জন্মদিন উপলক্ষে এসকে মিডিয়ার পক্ষ থেকে শুভকামনা এবং শুভেচ্ছা রইলো।

নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী জন্মদিন উপলক্ষে এসকে মিডিয়া ডটকমের পক্ষ থেকে বিশেষ ফিচার। শেষ পর্ব।

Ad