ব্যাপক আলোচনায় রাশেদ মামুন অপু

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : এই সময়ে এসে যেকয়জন অভিনেতা তাদের দক্ষতা এবং শক্তিশালী অভিনয় প্রতিভা দিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে চুটিয়ে কাজ করছেন তাদের মধ্যে আলোচিত এবং সম্ভাবনাময় একটি নাম রাশেদ মামুন অপু। মেধাবী এই অভিনেতা তার সহজাত অভিনয় দক্ষতা দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচনায় আসলেও দর্শকের অনেকেই জানেন না নাট্যনির্মাতা হিসেবে শোবিজে পথচলা শুরু করেছিলেন রাশেদ মামুন অপু।

নোমান রবিনের ‘কমন জেন্ডার’ সিনেমায় তার অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কাটলেও এরপর লম্বা একটা সময় তাকে বড় পর্দায় আর দেখা যায়নি। ২০১৮ সালে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল পরিচালিত ‘গাঙচিল’ সিনেমার মাধ্যমে আবারো নতুনকরে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন অপু। যদিও সিনেমাটি এখনো মুক্তি পায়নি, তবে অপুর এরপরের গল্পটা শুধুই এগিয়ে যাবার।

‘সিটিবাস’ নাটক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পান তিনি। আঞ্চলিক ভাষায় রাশেদ মামুন অপুর সহজাত অভিনয় দক্ষতা তার পরিচিতি আরো বাড়িয়ে তোলে। ‘তোতা মিয়া’ চরিত্রে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া অপু হাতে থাকা আটটি সিনেমার পাশাপাশি গত রবিবারে আরো দুটি নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘যাও পাখি বলো তারে’ সিনেমায় অভিনয় করবেন তিনি।

এছাড়া অন্যন্য মামুন পরিচালিত ‘কসাই’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। গত ডিসেম্বরে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নবাব এলএলবি’ এবং কিছুদিন আগে আরেকটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জানোয়ার’ সিনেমায় নেগেটিভ চরিত্রে অসাধারন অভিনয় করে প্রশংসিত হন অপু।

বিশেষ করে ‘জানোয়ার’ সিনেমায় কাজিম চরিত্রে তার অভিনয় দেখে তার চরিত্রটির প্রতি ঘৃনা আসেনি এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবেনা৷ অভিনেতার স্বার্থকতা তো এখানেই। কমেডি হোক বা ভিলেন সুযোগ পেলে যেকোনো চরিত্র জীবন্ত করে তুলে ধরাই তো একজন অভিনয় শিল্পীর মূল কাজ৷

রাশেদ মামুন অপু নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এসে হয়ে গেলেন অভিনেতা। এখন হতে চান একজন পরিপূর্ণ অভিনেতা। ছোট-বড়পর্দা ও ওটিটি প্লাটফর্ম তিন মাধ্যমেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন তিনি।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন যে, ‘কাজের স্বীকৃতি একটা মানুষকে চলার পথে শক্তি যোগায়। প্রচুর এনার্জি পাই নতুন করে কাজটি করতে। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জিং কাজ করার ইচ্ছা জাগায়। কাজটি দর্শকদের কাছে ভালো লাগলে তখন এতো ভালোবাসা এবং কাজের স্বীকৃতি পেয়ে নিঃসন্দেহে আমার খুব ভালো লাগে।

এখন তাই দায়িত্বটাও বেশি কারন কাজটা ভালো করার চিন্তাটাই তখন মাথায় জেঁকে বসে। তার জন্য যে সবোর্চ্চ এফোর্ট দিতে হয়, আমি সেটাই দেয়ার চেষ্টা করি। সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করছি। নেগেটিভ চরিত্রের প্রতি আমার একটু দুর্বলতা আছে। এমন চরিত্রে অভিনয় করে মজা পাই। তবে যেকোন কাজের ক্ষেত্রে মূল বিষয় হচ্ছে টিম ওয়ার্ক। সবার পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়েই একটি ভালো কাজ করা সম্ভব।’

বর্তমানে তার হাতে থাকা আটটি সিনেমাই কনটেন্ট, শিল্পী তালিকা, নির্মাতা ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায়। সিনেমাগুলি হচ্ছে সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের ‘মিশন এক্সট্রিম’, সৈকত নাসিরের ‘বর্ডার’, মীর সাব্বিরের ‘রাত জাগা ফুল’, রায়হান রাফীর ‘পরাণ’, ‘দামাল’ ও নেয়ামূলের ‘গাঙচিল’, ইফতেখার চৌধুরীর ‘মুক্তি’ ও ইফতেখার শুভর ‘মুখোশ’।

এই লিষ্টে এখন নতুন সংযোজন হচ্ছে অন্তর্ভুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘যাও পাখি বলো তারে’ এবং অন্যন্য মামুন পরিচালিত ‘কসাই’।

সামনের কাজগুলো নিয়ে শুভ কামনা রইলো এই গুনী অভিনেতার জন্য। ভবিষ্যতে তার অভিনয় দক্ষতা এবং মেধা দিয়ে বাংলাদেশের অভিনয় জগতে স্বতন্ত্র একটি জায়গায় নিজেকে অধিষ্ঠিত করবেন তিনি এটাই কামনা।

Ad