অষ্টম সপ্তাহ পূর্ণ করলো ‘বিশ্বসুন্দরী’

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : করোনাকালে দীর্ঘ সাতমাস বন্ধ থাকার পরে গত অক্টোবরে প্রেক্ষাগৃহ খুলে দেয়ার ঘোষনা দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ই ডিসেম্বর সারাদেশের ২৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড প্রযোজিত এবং টেলিভিশনের নন্দিত নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘বিশ্বসুন্দরী’।

ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রুম্মান রশীদ খান। হল কমে যাওয়া, মধ্যবিত্তদের হল বিমুখতা, করোনা ঝুঁকি সহ এমন অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেও দুই মাস ধরেই প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টানছে ‘বিশ্বসুন্দরী’। সেই হিসেবে সিনেমা নিয়ে সাধারণ দর্শকদের মাঝে যতোটুকু আগ্রহ ছিলো তার প্রায় সবটাই পূরন করেছে ‘বিশ্বসুন্দরী’ একথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

সিনেমার মূল স্তম্ভ বা পিলার বলা হয়ে থাকে গল্পকে। কারন গল্পটা নির্ভর করেই সিনেমার অন্যান্য সবকিছু তাৎপর্যময় হয়ে ওঠে৷ এই ক্ষেত্রে ‘বিশ্বসুন্দরী’র নতুন এবং ভিন্নধর্মী গল্প আকৃষ্ট করেছে সব শ্রেনীর দর্শকদের। কিছু কিছু সংলাপ মনে দাগ কেটেছে। সিনেমায় প্রথমবারের মতো পরিচালক হিসেবে কাজ করলেও চয়নিকা চৌধুরী পরিচালক হিসেবে তার সেরাটাই উপহার দিয়েছেন।

বলা হয়ে থাকে একজন পরিচালকই হচ্ছে যেকোনো নাটক বা সিনেমার ক্ষেত্রে ‘ক্যাপ্টেন অব দ্যা শীপ’। নিজের কাজের মধ্য দিয়ে চয়নিকা চৌধুরী প্রমান করেছেন তিনিই এই সিনেমার ‘ক্যাপ্টেন অব দ্যা শীপ’। ‘বিশ্বসুন্দরী’ সব সেকশনেই যে অসাধারণ হয়েছে তেমন নয়, কিছু কমতি হয়তো ছিলো তবে সেসব ছাপিয়ে গল্প, অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি এবং নির্মানের মুন্সিয়ানা প্রশংসা পাবে।

সিনেমার আরেকটি প্লাস পয়েন্ট ছিলো এই সময়ে আমাদের চলচ্চিত্রের দুই আলোচিত তারকা সিয়াম আহমেদ এবং পরীমনির প্রথমবার জুটি হিসেবে অভিষেক। এই দুই তারকার কেমেষ্ট্রি, লুক, অভিনয় প্রশংসা পেয়েছে সবার কাছ থেকেই।

সাথে সাথে গল্পের প্রয়োজনেই গুরুত্ব পেয়েছে চম্পা, ফজলুর রহমান বাবু, মুনিরা মিঠু, এবং ছোট্ট হলে দাগ কেটে যাওয়া চরিত্রে কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীরের উপস্থিতি। বিশেষ করে অভিনেত্রী চম্পার অসাধারণ অভিনয় মন জয় করেছে সবার।

এছাড়া আনন্দ খালেদ, সুজন, সীমান্ত এবং হীরাও তাদের চরিত্রে নিজেদের সেরাটাই দিয়েছেন। রোমান্টিক গল্পের ঘরনার সিনেমা মনে করা হলেও শুধুমাত্র প্রেম নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের গল্প ও বলেছে ‘বিশ্বসুন্দরী’।

এই খারাপ সময়ে এসেও প্রেক্ষাগৃহে টানা দুই মাস পূর্ণ করলো ‘বিশ্বসুন্দরী’। মুক্তির ৮ম সপ্তাহে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স (বসুন্ধরা সিটি ও সীমান্ত সম্ভার শাখা), ব্লকবাস্টার সিনেমাস, সেনা অডিটোরিয়াম, বিজিবি (ঢাকা) ও চট্টগ্রামে সিলভার স্ক্রিনে চলছে ‘বিশ্বসুন্দরী’।

কাল নবম সপ্তাহে পদার্পন করবে গত বছরের অন্যতম সফল এবং প্রশংসিত সিনেমা ‘বিশ্বসুন্দরী’। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি, হল মালিক, প্রযোজক আর ডিস্ট্রিবিউটরদের মতে গত বছরের অন্যান্য সিনেমার তুলনায় ‘বিশ্বসুন্দরী’ ভালো চলছে।

অভিনন্দন এবং শুভ কামনা জানানোর সাথে সাথে ধন্যবাদও জানাতে হবে সুস্থধারার এই বানিজ্যিক সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে। কারন এই অস্থির সময়ে এমন বাজেটের একটি নান্দনিক সিনেমা নির্মান করে সেটি মুক্তি দেয়াটা কম ঝুঁকি বা ঝক্কির ছিলোনা।

‘বিশ্বসুন্দরী’ দর্শকদের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং প্রশংসা পেয়েছে এটাও সিনেমার সুদিনের জন্য একটি ভালো দিক। ভালো গল, সুন্দর নির্মান, অভিনয় শিল্পীদের অভিনয় একটি সিনেমাকে জনপ্রিয় এবং সফল করে তোলে এটাই আবারো প্রমান করলো ‘বিশ্বসুন্দরী’।

Ad