ওপার বাংলায় মোশাররফ করিমের ‘ডিকশনারি’

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : এর আগে ‘রাস্তা’, ‘তিস্তা’ ও ‘তারা’র মতো নান্দনিক সিনেমা পরিচালনা করেছেন ব্রাত্য বসু। ‘ডিকশনারি’ তার পরিচালনায় চতুর্থ সিনেমা। প্রায় দশ বছরের লম্বা বিরতির পর আবারো পরিচালক হিসেবে হাজির হতে যাচ্ছেন তিনি। এবং এই সিনেমার মধ্য দিয়ে কলকাতার সিনেমায় প্রথমবার অভিনয় করেছেন আমাদের দেশের জনপ্রিয় এবং দক্ষ অভিনেতা মোশাররফ করিম।

বুদ্ধদেব গুহর দু’টি ছোট গল্প ‘বাবা হওয়া’ ও ‘স্বামী হওয়া’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘ডিকশনারি’। জীবনে চলার পথে আমাদের সম্পর্কের নানা রকম ব্যবধান দেখা যাবে এই সিনেমায়। মোটা গোঁফ, সাদাসিধে চেহারার এক ব্যক্তি যার নাম মকরক্রান্তি চ্যাটার্জী। যিনি জীবনে খুব বেশি পড়াশোনা করেননি, তবে একটি আবাসন কোম্পানির মালিক এমনই একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম।

মার্ক অ্যান্ড চ্যাটার্জী নামক রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক যিনি স্ত্রী (শ্রীমতী) আর ছেলে (রাকেশ) কে নিয়ে কলকাতার রাজারহাটের একটি বহুতল ভবনে থাকেন। কঠোর দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে উঠে আসা মকর, ছেলেকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট বানানোর স্বপ্ন দেখেন। ইংরেজি ভাষা বলা নিয়ে মকরের বিশেষ দুর্বলতা আছে এমন একজন ব্যক্তির চরিত্রে মোশাররফ করিম নিজের সেরাটাই দিয়েছেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

অন্যদিকে অশোক সান্যালের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার অন্যতম আলোচিত এবং দক্ষ অভিনেতা আবীর চ্যাটার্জি। পুরুলিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। স্ত্রী- কন্যা নিয়ে সরকারি বাংলোতে থাকা, পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল, আচার-ব্যবহার পরিমার্জিত, রুচিমান এবং স্বভাবে বিষণ্ণ অন্তর্মুখী চরিত্রে আবির ট্রেলারেই চমকে দিয়েছেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নুসরাত জাহান।

আবীর চ্যাটার্জির স্ত্রী স্মিতা সান্যালের চরিত্রে নন-গ্ল্যামার রুপে হাজির হয়েছেন তিনি। পুরুলিয়ার রুক্ষতা বা নির্জনতা কিংবা হয়তো বন্ধুর অভাবেই সংসারের প্রতি কিছুটা উদাসীন এবং স্বভাবে একেবারে একজন ছেলেমানুষের চরিত্রে সবাইকে চমকে দিয়েছেন নুসরাত। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার আরেকজন নন্দিত নির্মাতা এবং অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পাচ্ছে ‘ডিকশনারি’। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন নিবেদিত এই সিনেমা এখনো মুক্তি না পেলেও এরই মধ্যে নিজের পরিচালনায় আগামী সিনেমায় মোশাররফ করিমকে নিয়ে আবারো কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।

কলকাতার একটি দৈনিক সংবাদপত্রে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন- ‘আমি মোশাররফ করিমের একজন ভক্ত বা অনুরাগী। প্রথম থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম মকরক্রান্তি চরিত্রে আমি মোশাররফ করিমকে নেব, সেই মোতাবেক প্রযোজকের সঙ্গে কথাও বলি যে, এই চরিত্রে মোশাররফ করিমকেই আমার প্রয়োজন। প্রযোজকরা আমার সঙ্গে খুবই কো-অপারেট করেন এবং বাংলাদেশে যেয়ে “অনেক কষ্টে মোশাররফ করিমকে রাজি করাই। ‘ডিকশিনারি’ সিনেমায় তিনি অসাধারণ অভিনয় করেছেন৷ আমার পরবর্তী সিনেমায় হয়তো তিনি আমার সাথে কাজ করবেন।”

এর আগে আমাদের দেশে ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘থার্ড পারসন সিংগুলার নাম্বার’, ‘প্রজাপতি’, ‘টেলিভিশন’, ‘হালদা’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘কমলা রকেট’ সহ বেশকিছু নান্দনিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। এবার ওপার বাংলার সিনেমায় তিনি আরো শক্তিশালী অভিনয় দক্ষতার প্রদর্শন করবেন সেটাই কামনা।

Ad