আমি সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি : মেহেদী হাসান

মেহেদী হাসান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ের উপর বিবিএ এবং ২০১২ সালে এমবিএ শেষ করেন। ক্যারিয়ার শুরুতেই তিনি ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনী অফিসার হিসেবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট-এ কাজ করেন। এবং পরবর্তীতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে ক্যারিয়ার প্রথম পাঁচ বছর এই প্রতিষ্ঠানে অতিক্রম করেন। এছাড়াও তিনি মেঘনা গ্রুপ ও সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাশেম ফুডস লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন।

বর্তমানে তিনি ওরিয়ন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেডের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট এর হেড অফ এক্সপোট হিসেবে কর্মরত আছেন। ক্যারিয়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে এসকে মিডিয়ার সাথে কথা বলেছে তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাকিলুর রহমান। 

প্রথমেই আপনার ক্যারিয়ার শুরুর গল্পটা জানতে চাই?

মেহেদী হাসান : আমার পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরপরই আমি ২০১৩ সালে কর্পোরেট সেক্টরে যোগদান করে আমার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করি। ব্যক্তিগতভাবে আমি কর্পোরেট সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই মনোনিবেশ করি এবং বর্তমানে আমি সফলভাবে এই সেক্টরে কাজ করছি। আমার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আমি কখনো চিন্তা করিনি যে আমাকে সরকারি চাকরি করতে হবে। তাই আমার পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরবর্তীতে আমি কখনো কোনো সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করিনি আর কোন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি।

কর্পোরেট জীবনটা কেমন?

মেহেদী হাসান : আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমি নিজেকে কর্পোরেট লাইফের সঙ্গে মানিয়ে নিই এবং আমার ইচ্ছে ছিল কর্পোরেট সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। যেহেতু মার্কেটিং এর উপরে আমি পড়াশোনা করেছি তাই আমার ইচ্ছা ছিল মার্কেটিং এ কাজ করা এবং আমি দেখেছি আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমি আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজারে কাজ করার চেষ্টা করি এবং সফল হই।

আমি প্রফেশনাল জীবনে বা ব্যক্তিগত জীবনে সবসময়ই  চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক রপ্তানির বাজারে ফুড সেক্টর কাজ করে যাচ্ছি। কাজের সুবাদে আমি পৃথিবীর অনেকগুলি দেশ ভ্রমণ করেছি এবং সরাসরি সে সকল দেশের বাজার বিশ্লেষণ এবং বাজারের চাহিদা সম্পর্কে অবগত হয়েছি।  এগুলো আমার ক্যারিয়ার সফল হওয়ার পেছনে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে।

বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?

মেহেদী হাসান : ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেড কাজ করছি সেহেতু আমার প্রধানত রপ্তানির পণ্য চা। যা কিনা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেডে মূলত চা রপ্তানির কাজ পুরোপুরি ভাবে শুরু হয় এবং আমি সফলভাবে এক বছরের মধ্যে ২০টি দেশে চা রপ্তানি করতে সফল হয়েছি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, আমরা আমাদের নিজস্ব প্যাকেজিং ও নিজস্ব ব্র্যান্ড ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের জায়গা করে নিতে পেরেছি এবং খুব ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছি।

ওরিয়ন টি’য়ের বিশেষত্ব কী?

মেহেদী হাসান : ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেডের নিজস্ব ওরিয়ন ও জাফলং ব্র্যান্ডের গ্রিন টি রয়েছে। এই চা খুবই স্বাস্থ্যকর এবং উন্নত মানের পানীয়। দেশীয় বাজারে ‘জাফলং’ ব্র্যান্ডের গ্রিন টি ও ব্ল্যাক টি অনেক ধরনের প্যাকেজিং করে চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্য হিসেবে ওরিয়ন নিজস্ব নামে ওরিয়ন ব্র্যান্ডের গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি, টি ব্যাগ এবং লুজ আকারে প্যাকেজিং করে রপ্তানি করছে। এই ব্র্যান্ডের চা’য়ের বিশেষত্ব হলো- সেরা বাগানের সেরা চা এবং বিশেষ ব্লেন্ড।

তরুণদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতে চান?

মেহেদী হাসান : যারা কিনা তরুণ মার্কেটিয়ার কর্পোরেট সেক্টরে থেকে আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নিজের ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠিত করতে চান; তাদের প্রতি আমি বলবো প্রথমে আপনার লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং আপনি কোন সেক্টরে নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন, কোন সেক্টরে আপনার কাজ করতে বেশি ভালো লাগে সেগুলোর উপরে নির্ভর করবে আপনার ক্যারিয়ার। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত।

আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

মেহেদী হাসান : দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ওরিয়ন নতুন নতুন স্বাদের বেশ কিছু উন্নত মানের চা বাজারে আনতে যাচ্ছে। আমি যেহেতু ‘ওরিয়ন টি’ কোম্পানি লিমিটেডের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের হেড অব এক্সপোর্ট হিসেবে কর্মরত আছি, তাই আমার পরিকল্পনা ‘ওরিয়ন টি’ বিশ্ববাজারে আরও সুনামের সঙ্গে ছড়িয়ে দেওয়া। চায়ের বাজার বাংলাদেশের দখলে নেওয়া। 

Ad