চলে গেলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় দক্ষিণ কলকাতার নিজের বাসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে এক খবরে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। কয়েক বছর ধরেই তিনি কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন এবং নিয়মিত ডায়ালাইসিস চলছিলো তার।

পাশাপাশি তার বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্ত ঘুম থেকে ডেকে তুলতে গিয়ে তার সাড়া না পেয়ে চিকিৎসকে ফোন করেন। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।

দক্ষিণ পুরুলিয়ার আনারাতে শৈশব কেটেছে বুদ্ধদেবের। অর্থনীতি নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনা ও সাহিত্য জগত থেকে পরিচালক হয়ে ওঠার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি। চার্লি চ্যাপলিন, ইঙ্গমার বার্গম্যান, আকিরা কুরোসাওয়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটে সেখানেই।

তিনি অবসর নেওয়ায় বিশ্বাসী ছিলেন না। এমনকি মার্চ মাসেও তিনি নতুন চিত্রনাট্য লিখছিলেন। এক নারী গোয়েন্দার গল্পের সুতো বুনছিলেন বুদ্ধদেব।

১৯৬৮ সালে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে পরিচানায় যাত্রা শুরু করেন বুদ্ধদেব। ‘দূরত্ব’, ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘স্বপ্নের দিন’, ‘উড়োজাহাজ’-এর মতো ছবি নির্মাণ করে দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।
‘বাঘ বাহাদুর’, ‘চরাচর’, ‘লাল দরজা’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘কালপুরুষ’ ছবির জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের গুনী অভিনেত্রী চম্পা তার পরিচালনায় ‘লাল দরজা’ সিনেমায় অসাধারণ অভিনয় উপহার দিয়েছিলেন। নির্মাণের পাশাপাশি সাহিত্য জগতেও বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর পদচারণা ছিলো। কফিন কিম্বা সুটকেস, হিমজগ, ছাতা কাহিনি, রোবটের গান, শ্রেষ্ঠ কবিতা, ভোম্বোলের আশ্চর্য কাহিনি ও অন্যান্য কবিতাসহ বেশ কয়েকটি কবিতা বই লিখেছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বিনম্র শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রইলো এই গুনী লেখক এবং নির্মাতার জন্য।

Ad