‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ নিয়ে মিজানুর রহমান আরিয়ানের ওটিটি যাত্রা

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : চলচ্চিত্র, মঞ্চ, টেলিভিশন, রেডিও হয়ে ডিজিটাল যুগে এসে ওটিটি সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে সময়ের চাহিদার কারনে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে অন্য প্রান্তের যেকোন সিনেমা, সিরিজ বা ডকুমেন্টারি দেখার সুযোগ মিলে এই প্ল্যাটফর্মে। তাই আগের সব মাধ্যমের চেয়ে এখন বিস্ময়কর জনপ্রিয়তা ওটিটির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বেশ ভালো করেই।

ভিন্নধর্মী গল্প, নির্মানের মুন্সিয়ানা, শক্তিশালী অভিনয় দক্ষতা দিয়েই আমাদের দেশীয় কনটেন্ট সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার সুযোগ মিলছে ওটিটির কল্যানে। ইতিমধ্যে বেশকিছু দেশীয় কনটেন্ট সাড়া ফেলেছে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে অন্যদেশেও।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ মুক্তি পাচ্ছে টেলিভিশনে এই সময়ের জনপ্রিয় এবং আলোচিত নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের প্রথম ওয়েবফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’। ইতিমধ্যে পোষ্টার, টিজার, ট্রেলার, গান রিলিজের পর দর্শকদের কাছ থেকেও এই ওয়েবফিল্ম নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বন্ধুত্ব এবং প্রেম মানবজীবনের অনেক সম্পর্কের মাঝে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গল্পই তুলে ধরা হয়েছে তরুন প্রজন্মের জীবনের নানা রকম মোড় এবং চমকের মধ্য দিয়ে।

আগে কিছু কাজ করলেও ২০১৭ সালে ‘বড় ছেলে’ নাটকটি বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। টেলিভিশনের পর ইউটিউবে প্রচার হওয়ার পর নাটকটি এখন পর্যন্ত ৩ কোটির বেশি দর্শক দেখেছেন। অন্যভাবে বলা যায় এই নাটকটির মধ্যে দিয়েই ইউটিউব আমাদের দেশে নাটকের ক্ষেত্রে অনেক হিসাব-নিকাশ নতুন করে শুরু হয়েছিলো।

ব্যাচ-২৭, বুকের বা পাশে, শেষটা সুন্দর, গজদন্তিনী, শহর ছেড়ে পরানপুর বা সাম্প্রতিক যত্ন সহ বেশকটি ভালোবাসার গল্প নিয়ে কাজ করে নিজেকে রোমান্টিক ঘরানার নাটকে এই সময়ের অন্যতম সেরা পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আরিয়ান। এবার ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তার প্রথম ওয়েবফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি।

যদিও মিজানুর রহমান আরিয়ান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতি উদয় না হলে এই গল্প দিয়ে সিনেমা বানাতেন তিনি। কারন নিজের প্রথম সিনেমার জন্য তিনি এই গল্পটিই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ওয়েবফিল্ম হিসেবেই এটি নিয়ে ওয়েব যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন তিনি। তার সুনিপুণ নির্মানের ঝলক দেখা গেছে ট্রেলারে। এবার অপেক্ষা পুরোটা দেখার জন্য।

মিজানুর রহমান আরিয়ানের নাটকেও ইমোশন, প্রেম, বিচ্ছেদ, সামাজিক নানা বৈষম্য এর আগেও স্থান পেয়েছে। আর ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ তে এসব নিয়েই পুরো গল্প ভিন্নমাত্রা পাবে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে চেনা ছকের মাঝেও অবশ্যই কিছু টুইষ্টও জায়গা পাবে বলেই মনে হচ্ছে। সবমিলিয়ে মিজানুর রহমান আরিয়ান হতাশ করবেনা আমাদের সেটা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ তে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, ইয়াশ রোহান খাইরুল বাশার, জুনায়েদ , নাজিফা তুষি, অর্ষা, তাসনিয়া ফারিণ, তাসনুভা তিশাসহ আরও অনেকে। বিশাল ক্যানভাসের বিগ বাজেটের এই দক্ষ ষ্টারকাস্টের এই ওয়েবফিল্মটি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আটজন এই সময়ের তরুন-তরুনী চরিত্র সম্পর্কে ইতিমধ্যে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে আমাদের।

কেউ খুব ত্যাড়া, আবার কেউ একটু বোকা, কেউ রাগী, কেউ রোমান্টিক আবার কেউ একদমই শান্ত এরকম নানা ধরনের মানবিক এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দেখা মিলতে যাচ্ছে প্রেম এবং বন্ধুত্বের গল্পে যেটা আমাদের জন্য ভিন্ন একটা অনুভূতি হয়েই ধরা দিবে। দেখার বিষয় সামিয়া, আবির, কথা, সিফাত, তানিয়া, মুন্না, রাতুল এবং ফাইজা চরিত্রগুলো আসলেই এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের তরুন প্রজন্মের বাস্তবতায় কতোটুকু সফল ভাবে উপস্থাপিত হতে পারে!!

সত্য একটি ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’র শ্যুটিং সম্পন্ন করা হয়েছে ঢাকা, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনসহ বেশকিছু মনোরম লোকেশনে। কোভিড পরিস্থিতি মাঝে কিছুটা স্থির থাকাকালীন সময়ে ১৬ দিনে এটির শুটিং সম্পন্ন করা হয় বলে জানা যায়। তবে নির্মাতাসুত্রে জানা গেছে চিত্রনাট্য, শ্যুটিং, পোষ্ট প্রোডাকশন সহ সবমিলিয়ে কাজটির জন্য প্রায় বছরখানেক সময় দিতে হয়েছে পুরো টিমকে।

তবে সবার আন্তরিকতা এবং ভালো একটি ব্যতিক্রমী কনটেন্ট উপস্থাপনের প্রতি ডেডিকেশন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ কে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। তবে দর্শকেরাই বিচার করবে যে, গতানুগতিকের বাইরে এসে মিজানুর রহমান আরিয়ান তার প্রথম ওয়েবফিল্ম দিয়ে তাদের মনে দাগ কাটতে কতোটা সফল হলেন!! জবাব মিলবে আজ রাতেই, অপেক্ষা আর অল্প কিছু সময়ের।

Ad