মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে খিজির হায়াত খানের ‘ওরা সাতজন’

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে দক্ষ এবং আলোচিত নির্মাতা খিজির হায়াত খান নির্মান করতে যাচ্ছেন ‘ওরা সাতজন’। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সিনেমার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি কিছুদিন আগেই। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে নতুন প্রজন্মের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধকে আরো কিছুটা জানা এবং সেলুলয়েডে দেখানোর ইচ্ছা থেকেই এই সিনেমা নির্মাণ করছেন খিজির হায়াত খান।

তবে শিল্পী তালিকা নিয়ে একটা আগ্রহ থাকলেও অফিশিয়ালি কিছুই জানা যায়নি এতোদিন। তবে আজ সন্ধ্যায় এই সিনেমার শিল্পী ও কলাকুশলীদের নাম অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে।

দেশের বেশ কিছু দক্ষ এবং শক্তিশালী অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের নিয়ে এই মাসেই সিনেমা নির্মাণের যুদ্ধে নামছেন খিজির হায়াত খান৷ শিল্পী তালিকা যেমন চমকপ্রদ তেমনি আশা জাগানিয়া। ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সাইফ খান, নাফিস আহমেদ, খালিদ মাহবুব তূর্য, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব, শিবা শানু, তাসনিম তাসফি, জয় রাজ এবং হামিদুর রহমানকে দেখা যাবে প্রশান প্রধান চরিত্রে।

উল্লেখ্য, গুনী নির্মাতা খিজির হায়াত খান নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’। এর পর নির্মাণ করেন আলোচিত এবং প্রশংসিত সিনেমা ‘জাগো’। তবে প্রযোজক হিসেবে ‘মিষ্টার বাংলাদেশ’ নামক সিনেমাটি তাকে সব শ্রেনীর দর্শকদের কাছে পরিচিত করে তোলে।

করোনাকালীন পরিস্থিতি সামলে এবার তার নতুন সিনেমা ‘ওরা সাত জন’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের বীরত্ব গাঁথার গল্পের উপর নির্মিত এই সিনেমায় একজন ডাক্তারের চরিত্রে ইন্তেখাব দিনারকে দেখা যাবে। স্ফুলিঙ্গ’র পর গুনী অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম’কে দেখা যাবে এই সিনেমায়, তার চরিত্রের নাম অর্পণা সেন। ঊনপঞ্চাশ বাতাস খ্যাত ইমতিয়াজ বর্ষণ আছেন সোলাইমান কাজীর চরিত্রে। এছাড়া সাব ইনস্পেক্টর শাফির চরিত্রে সাইফ খান, পাকিস্তানি মেজর শাহরিয়ারের চরিত্রে হামিদুর রহমান, নাফিস আহমেদ আছেন সুমিতের ভূমিকায়, জয়রাজকে দেখা যাবে চেয়ারম্যান আউয়ালের চরিত্র।

শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব আছেন সার্জেন্ট মুক্তাদিরের ভূমিকায়, শিবা শানু আছেন ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মোশাররফের চরিত্রে এবং তাসনিয়াকে দেখা যাবে সিগ্ধার চরিত্রে। এছাড়া পরিচালনার পাশাপাশি মেজর লুৎফর নামক একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে নির্মাতা খিজির হায়াত খানকে। সবমিলিয়ে কাস্টিং দেখে এটুকু আশা করাই যায় যে, অভিনয় দক্ষতা দিয়ে প্রত্যকেই এই সিনেমাটিকে আলাদা একটি জায়গায় নিয়ে যাবেন।

৫০ বছর আগেরকার যুদ্ধকালীন সময় সেলুলয়েডে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরার জন্য গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ, সিনেমাটোগ্রাফি, সংগীত, পোষাক সব ডিপার্টমেন্টেই সমান নজর রেখে কাজটি করতে হচ্ছে। পরিচালনা এবং অভিনয়ের পাশাপাশি এই সিনেমার সংলাপ এবং চিত্রনাট্যের দায়িত্বও নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন খিজির হায়াত খান নিজেই।

সংগীতের দায়িত্বে আছেন নাজমুল আবেদীন আবির। সিনেমায় গান গেয়েছেন ব্যান্ড অসমাপ্ত। এবং সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্বে মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান। সবকিছু ঠিক থাকলে এই মাসেই শ্যুটিং শুরু হচ্ছে এই বিশাল ক্যানভাসের সিনেমার।

শুভকামনা রইলো এই গুনী নির্মাতা এবং তার পুরো টিমের জন্য। মুক্তিযুদ্ধের মতো এই বিশাল ক্যানভাসের একটি সিনেমা নির্মানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার এই তরুন এবং দক্ষ নির্মাতা৷ আশা করি, একটি ভিন্নধর্মী গল্প আর সুনিপুন নির্মানের মাধ্যমে পঞ্চাশ বছর আগের সময়কাল এবং জীবনযাত্রা ব্যতিক্রমী ভাবেই সেলুলয়েডে দেখতে যাচ্ছি আমরা।

Ad