সাফল্যের শীর্ষস্তরে পৌঁছতে নেই কোনও শর্টকার্ট : মেহেদী হাসান

ফিচার ডেস্ক : নীল দিগন্ত জোড়া উন্মুক্ত আকাশের পানে স্বপ্নের রঙিন ঘুড়ি ওড়ানো, সবুজ মাঠে দৌড়ে বেড়ানো দুরন্তপনা, সুযোগ পেলেই বন্ধুদের সঙ্গে সব সময় আড্ডা দেয়া আর খেলাধুলা করে সময় পার করা কোন এক মানুষ হয়ে উঠবে কর্পোরেট সেক্টরের একজন সফল ব্যক্তিত্ব কেইবা বুঝতে পেরেছিল সে দিন। হয়ত অজান্তেই লক্ষ্যগুলো সামনে এসে গিয়েছিল আর স্বপ্নগুলোকে করেছেন বাস্তব। পাঠশালায় ব্যাকবেঞ্চ প্রিয় মানুষগুলোও হয়ে উঠতে পারে কর্মক্ষেত্রে সফলতম একজন। ছাত্রজীবনে ছিলেন দুরন্ত, শ্রেণীকক্ষে ছিলেন পেছনের বেঞ্চে বসা সহপাঠীদের দলে।

ছাত্র জীবনে অবসর সময় পার করতেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর খেলাধুলা করে। ছিলেন ক্রিকেট-ফুটবলপ্রেমী। খেলাধুলার প্রতি ছিল অগাধ ভালবাসা- সময় পেলেই যেতেন বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে। ছাত্রজীবনে কখনও কখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর ঘুরতে যাওয়ার আনন্দ আর অনুভূতিগুলো পুনরায় ফিরে পাওয়ার ইচ্ছা। ছাত্র জীবনের সকল দুরন্তপনার মাঝেও তিনি পরীক্ষার ফলাফলে ছিলেন মেধাবীদের তালিকায়। বলছি কর্পোরেট ও বিশ্ব বাজারে সফল মেহেদী হাসানের গল্প।

এক কথায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অনেকটা স্বাধীন প্রকৃতির, পরিশ্রমী ও অধ্যবসায়ী। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতক (বিবিএ) ও স্নাতকোত্তর (এমবিএ) শেষ করে চিরাচরিত সরকারী আমলা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর না হয়ে স্বপ্ন দেখেছেন কর্মক্ষেত্রে কর্পোরেট সেক্টরে কঠোর শ্রম ও সাধনার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। তার সফলতাও পেয়েছেন তিনি। বর্তমানে মেহেদী হাসান ওরিয়ন গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেডের হেড অব এক্সপোর্ট হিসেবে দায়িত্বরত। তিনি তার ভাবনার স্বপ্নগুলোকে করেছেন বাস্তব।

বর্তমান বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরের একজন সফল ব্যক্তিত্ব এবং অনেক তরুণের দিকনির্দেশক। তিনি মনে করেন সাফল্যের শীর্ষস্তরে পৌঁছতে নেই কোনও শর্টকার্ট। বর্তমানে তিনি মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ছাপিয়ে তার অক্লান্ত পরিশ্রম, কর্মদক্ষতা, প্রতিভা প্রসারিত করেছেন আন্তর্জাতিক বাজারে। রফতানির স্বার্থে এবং বিশ্বের বিভিন্ন বাজার বিশ্লেষণের জন্য তিনি ভ্রমণ করেছেন ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এবং এ সকল দেশে অংশগ্রহণ করেছেন পৃথিবীর বড় বড় ও স্বনামধন্য অনেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, প্রদর্শনী ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কর্মশালায়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যা অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের মানুষের জন্য ছিল শুধুই স্বপ্ন তা তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও একাগ্রতার মাধ্যমে সফলভাবে করে দেখিয়েছেন। আর বাংলাদেশের রফতানি বাজার এবং কর্পোরেট সেক্টরের তিনি একজন সফল রফতানি বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপক। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের রফতানি বাজার চাহিদা এবং পণ্যের গুণগত মান দক্ষিণ এশিয়ার রফতানিকারক অনেক দেশের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।

বিশ্ববাজারে রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বেশিরভাগ সেক্টরেই অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ওরিয়ন টি কোম্পানি লিমিটেড নিজস্ব ব্র্যান্ডিংয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সম্পূর্ণ নতুনভাবে অংশগ্রহণ করে মাত্র এক বছরের মধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, ওসেনিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ২০টি দেশে নিজস্ব প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চা রফতানি করতে সফল হয়েছেন। বাংলাদেশের চা রফতানি নিয়ে তার রয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা।

কর্মক্ষেত্রে তিনি আন্তর্জাতিক মার্কেটিং বিভাগে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্ম জীবনের মাত্র আট বছরের মধ্যে তিনি সফলভাবে কাজ করেছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য অনেক প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, সজীব গ্রুপ ও ওরিয়ন গ্রুপ অন্যতম। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের রফতানির ক্ষেত্রে রেখেছেন বিশেষ অবদান। তার এই সাফল্যর পেছনে রয়েছেন বিশেষ একটিগুণ, পণ্য কাস্টমাইজেশন করে ভোক্তা ও ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক বাজারে নিয়ে আসা।

বিশেষভাবে বাংলাদেশ থেকে চা, কনডেন্স মিল্ক, মিছুয়া বা হোয়াইট ভারমিসিলির মতো পণ্য তার প্রচেষ্টায় নতুনভাবে বিশ্ব বাজারে পরিচয় করিয়ে দিয়ে রফতানি বাজারে এর চাহিদা সৃষ্টি করেছেন। বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক মার্কেটিং বিভাগের একজন সফল ব্যক্তিত্ব এবং বিশ্ববাজারে নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণু রাখার জন্য অক্লান্ত কাজ করে যাচ্ছেন।

Ad