মুক্তিযুদ্ধের গল্পে ‘ওরা সাতজন’ নির্মানই এক অন্যরকম যুদ্ধ

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : মুক্তিযুদ্ধের সময় ৫ নম্বর সেক্টরে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা একটি সুতোয় বেধে বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সিনেমায় তুলে আনতে যাচ্ছেন দক্ষ এবং আলোচিত নির্মাতা খিজির হায়াত খান।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে নতুন প্রজন্মের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধকে আরো কিছুটা জানা এবং সেলুলয়েডে দেখানোর ইচ্ছা থেকেই ‘ওরা সাতজন’ নামে এই বিশাল ক্যানভাসের সিনেমাটি নির্মাণ করছেন খিজির হায়াত খান।

সিনেমার নাম ওরা ৭ জন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নির্মাতা খিজির হায়াত জানআন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ৭ সংখ্যাটা ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের আছে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৭ই মার্চ আমাদের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। একইভাবে এই সিনেমাতে অনেক অভিনয়শিল্পী থাকলেও মূল গল্পটা সাত জনকে নিয়েই এগিয়ে যাবে।’

বর্তমানে সিলেটের জৈন্ত্যাতে পুরোদমে চলছে এই সিনেমার দৃশ্যধারণ। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের বীরত্ব গাঁথার গল্পের উপর নির্মিত এই সিনেমায় একজন ডাক্তারের চরিত্রে ইন্তেখাব দিনারকে দেখা যাবে। স্ফুলিঙ্গ’র পর গুনী অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম’কে দেখা যাবে এই সিনেমায়, তার চরিত্রের নাম অর্পণা সেন।

ঊনপঞ্চাশ বাতাস খ্যাত ইমতিয়াজ বর্ষণ আছেন সোলাইমান কাজীর চরিত্রে। এছাড়া সাব ইনস্পেক্টর শাফির চরিত্রে সাইফ খান, পাকিস্তানি মেজর শাহরিয়ারের চরিত্রে হামিদুর রহমান, নাফিস আহমেদ আছেন সুমিতের ভূমিকায়, জয়রাজকে দেখা যাবে চেয়ারম্যান আউয়ালের চরিত্রে, খালিদ মাহবুব তূর্য আছেন নজরুলের চরিত্রে।

শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব আছেন সার্জেন্ট মুক্তাদিরের ভূমিকায়, শিবা শানু আছেন ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মোশাররফের চরিত্রে এবং তাসনিয়াকে দেখা যাবে সিগ্ধার চরিত্রে।

এছাড়া পরিচালনার পাশাপাশি মেজর লুৎফর নামক একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে নির্মাতা খিজির হায়াত খানকে। সবমিলিয়ে কাস্টিং দেখে এটুকু আশা করাই যায় যে, অভিনয় দক্ষতা দিয়ে প্রত্যকেই এই সিনেমাটিকে আলাদা একটি জায়গায় নিয়ে যাবেন।

উল্লেখ্য, গুনী নির্মাতা খিজির হায়াত খান নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’। এর পর নির্মাণ করেন আলোচিত এবং প্রশংসিত সিনেমা ‘জাগো’।

তবে প্রযোজক হিসেবে ‘মিষ্টার বাংলাদেশ’ নামক সিনেমাটি তাকে সব শ্রেনীর দর্শকদের কাছে পরিচিত করে তোলে। করোনাকালীন পরিস্থিতি সামলে এবার তার নতুন সিনেমা ‘ওরা সাত জন’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।

৫০ বছর আগেরকার যুদ্ধকালীন সময় সেলুলয়েডে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরার জন্য গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ, সিনেমাটোগ্রাফি, সংগীত, পোষাক সব ডিপার্টমেন্টেই সমান নজর রেখেই পুরো কাজটি করতে হচ্ছে।

পরিচালনা এবং অভিনয়ের পাশাপাশি এই সিনেমার সংলাপ এবং চিত্রনাট্যের দায়িত্বও নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন খিজির হায়াত খান নিজেই।

সংগীতের দায়িত্বে আছেন নাজমুল আবেদীন আবির। সিনেমায় গান গেয়েছেন ব্যান্ড অসমাপ্ত। সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্বে মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান। শুভকামনা রইলো এই গুনী নির্মাতা এবং তার পুরো টিমের জন্য।

মুক্তিযুদ্ধের মতো এই বিশাল ক্যানভাসের একটি সিনেমা নির্মানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার এই তরুন এবং দক্ষ নির্মাতা৷ আশা করি, একটি ভিন্নধর্মী গল্প আর সুনিপুন নির্মানের মাধ্যমে পঞ্চাশ বছর আগের সময়কাল এবং জীবনযাত্রা ব্যতিক্রমী ভাবেই সেলুলয়েডে দেখতে যাচ্ছি আমরা।

Ad