আসছে মাহমুদ দিদারের ‘বিউটি সার্কাস’

অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে মাহমুদ দিদারের পরিচালনায় আলোচিত এবং প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘বিউটি সার্কাস’। ২০১৭ সালে শ্যুটিং শুরু হবার পরে নানা বিপত্তির কারণে সংশয় জেগেছিল এটির মুক্তি নিয়ে। ২০১৯ সালে সিনেমার টিজার রিলিজের পরে করোনা পরিস্থিতি সহ নানা কারনেই আবারো পিছিয়ে গিয়েছিলো আমাদের সার্কাস শিল্প এবং সেই শিল্পের সাথে জড়িতদের জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমার মুক্তি। সম্প্রতি প্রচারণার অংশ হিসেবে রিলিজ দেয়া হয় সিনেমাটির অফিশিয়াল পোস্টার। ব্যতিক্রমী এবং নান্দনিকতার ছোয়া থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে পোস্টারটি।

‘বিউটি সার্কাস’-এর শুটিং শুরু হয় ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। নওগাঁর সাপাহার ও মানিকগঞ্জে সার্কাসের বিশাল ক্যানভাসের এই চলচ্চিত্রটিতে আমাদের দেশ তো বটেই ওপার বাংলাতেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা গুণী অভিনেত্রী জয়া আহসানকে দেখা যাবে সার্কাসকন্যা ‘বিউটি’রূপে। সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন তৌকির আহমেদ, এ বি এম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদসহ আরও অনেকে।

সিনেমার গল্প সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় যে, একটি জনপ্রিয় সার্কাসের প্রধান নারী যাদুশিল্পী বিউটির যাদু প্রদর্শনীর কারিশমা আর রূপে পাগল এলাকার তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই তালিকায় আরো আছেন সার্কাসের মালিক স্বয়ং। সুন্দরী এবং বুদ্ধিমতি বিউটিকে নিজের করে পাবার প্রতিযোগিতায় নামে তারা। এতে এক সময় হুমকির মুখে পড়ে যায় পুরো বিউটির সার্কাসটি। কিন্তু কৌশলী বিউটি হাল ছাড়বার পাত্রী নয়। বুদ্ধির জোরে সে শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে ওঠে গভীর সংকট। সিনেমায় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সার্কাস শিল্প, এই শিল্পের সাথে জড়িত মানুষজন, তাদের জীবন যুদ্ধ, প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক নানা ব্যক্তিদের প্রাভাব বিস্তার, গ্রামীন এবং সামাজিক নানা পরিস্থিতি এসব নানা কিছু নিয়েই আবর্তিত হয়েছে এই সিনেমার গল্প।

‘বিউটি সার্কাস’ এর টিজার রিলিজ দেবার পরে মাহমুদ দিদার তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিন্নধর্মী স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন- ‘‘যেহেতু আমার টাকা নাই, তাই বুস্ট করতে পারবোনা! মানুষের কাছে পৌছোনোর জন্যে ভালো লাগাটাই প্রধান নিয়ামক। খুব কৃতজ্ঞ আমি , যারা ভালোবেসে আমাকে পাত্তা দিয়ে গেছেন। এখোনো দিচ্ছেন…। যেহেতু লাইক , কমেন্ট ,শেয়ার খুব ই গুরত্বপূর্ণ সেহেতু অনুরোধ রইলো , আমরা আমাদের টিজারটা আরো মানুষের কাছে নিয়ে যাই…।’’ এরকম একটি স্ট্যাটাস লিখে সিনেমার প্রচারনা করেছিলেন নির্মাতা৷ সেই টিজার রিলিজের প্রায় তিন বছর পরে এবার মুক্তির দোরগোড়ায় ‘বিউটি সার্কাস’।

এই সিনেমার মূল ভূমিকা মানে ‘বিউটি’ চরিত্রে অভিনয় করা দুই বাংলার দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান এক সাক্ষাৎকারে এই সিনেমা নিয়ে বলেছেন- ‘আমার অভিনয় জীবনের খুব রোমাঞ্চকর কাজের মধ্যে একটি হলো এই ‘বিউটি সার্কাস’। অভিনয় জীবনে এই প্রথমবার এমন ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ এসেছিলো তাই আমি লুফে নিয়েছিলাম অফারটা।

জানা যায়, ২০০ জনের নির্মাণসঙ্গী এবং সাথে ২ হাজার গ্রামবাসীর অংশগ্রহণে চিত্রধারণের কাজ করেন সম্পন্ন করেছেন নির্মাতা মাহমুদ দিদার। কোনো সেট নয়, সত্যিকারের বিশাল সার্কাস প্যান্ডেল নির্মাণ করার সাথে সাথে গ্রাম্যমেলার আয়োজনও করা হয়েছিলো গল্প, চিত্রনাট্য বিশ্বাসযোগ্য ভাবে সেলুলয়েডে ফুটিয়ে তোলার জন্য।

এক ভাবে দেখতে গেলে ‘বিউটি সার্কাস’ বাংলা সিনেমায় একটা নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে। সার্কাসের সঙ্গে আমাদের একটা প্রজন্মের শৈশব-কৈশোর জড়িয়ে আছে। এই আধুনিক সময়ে এসে আগের সেই জৌলুস হারানো সার্কাসের বৈচিত্র‍্যময় নানা বিষয় বিশ্বাসযোগ্য ভাবে উপস্থাপন করাটাই একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জে মাহমুদ দিদার এবং তার টিম কতোটা সফল হলেন তার উত্তর মিলবে সিনেমা রিলিজের পরে।

তবে পোস্টার, টিজার এবং শিল্পী তালিকা দেখে যতটুকু বলা যায় নান্দনিক সিনেমার লিস্টে যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘বিউটি সার্কাস’। দক্ষ নির্মাতা মাহমুদ দিদারের ব্যতিক্রমী পরিচালনা এবং জয়া আহসান, ফেরদৌস, এবিএম সুমন, তৌকির আহমেদ বা শতাব্দী ওয়াদুদের মতো দক্ষ এবং মেধাবী অভিনেতাদের শক্তিশালী অভিনয়, অসাধারন এক ভিন্নধর্মী কন্টেন্ট, বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধনে ‘বিউটি সার্কাস’ জয় করবে সবার মন এমনটাই আশা করছেন সিনেমা সংশ্লিষ্ট সকলে। শুভ কামনা রইলো ‘বিউটি সার্কাস’ এর জন্য….

Ad