পাঁচ বছরের বিরতির পর ফিরছেন এবিএম সুমন

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

২০১৭ সালে মুক্তি পেয়েছিলো আলোচিত এবং ব্যবসা সফল সিনেমা ‘ঢাকা অ্যাটাক’। দীপংকর দীপনের এই সিনেমায় অন্যান্য চরিত্রকে পাশ কাটিয়ে আশফাক চরিত্রে এবিএম সুমন এতোটাই সাবলীল ছিলেন যে, অনেকের মতে সিনেমার সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ প্যাকেজ ছিলেন তিনিই। আশফাক চরিত্রে তার লুক, ভয়েস, বডি ল্যাংগুয়েজ, ফিটনেস এবং অভিনয় সব মিলিয়ে ঢাকাই সিনেমায় এমন সুদর্শন অভিনেতার যাত্রাপথ এতোটাই পজিটিভ ছিলো যা তাকে ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খান পরবর্তী তরুন অভিনেতাদের দৌড়ে এগিয়ে রেখেছিলো অনেকটাই। কিন্তু দারুন লাইনআপ থাকা সত্ত্বেও ভাগ্য খারাপ বলা হোক বা সময়, ২০১৭ থেকে ২০২২ এই পাঁচ বছরে আর কোনো সিনেমাই রিলিজ পায়নি এই পরিশ্রমী অভিনেতার।

লম্বা বিরতি কাটিয়ে সেই কঠিন সময় পার করে এই ২০২২ সালেই এবিএম সুমন আসছেন অভিনেতা হিসেবে একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে। মাহমুদ দিদারের ‘বিউটি সার্কাস’ রিলিজ পাচ্ছে আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর৷ জয়া আহসান, তৌকির আহমেদ, ফেরদৌস, গাজী রাকায়েত, শতাব্দী ওয়াদুদের মতো শক্তিশালী অভিনেতাদের পাশাপাশি এই বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমায় এবিএম সুমন যে অন্যতম তুরুপের তাস তার প্রমাণ মিলেছে গতকাল রিলিজ পাওয়া ট্রেলারে।

‘বিউটি সার্কাস’ এরপরে আগামী মাসেই রিলিজ পাচ্ছে ‘হৃদিতা’। কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হকের উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানের এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ইস্পাহানি আরিফ জাহান। এই সময়ের অন্যতম আলোচিত এবং সম্ভাবনাময় চিত্রনায়িকা পূজা চেরীর সাথে এই রোমান্টিক গল্পের সিনেমায় জুটি বেধেছেন সুমন। ইতিমধ্যে সিনেমার রিলিজ ডেটের অফিশিয়াল ঘোষণা দিয়ে একটি পোস্টারও রিলিজ দিয়েছে প্রযোজনা সংস্থা।

এছাড়া শ্যুটিং শেষে এখন পোস্ট প্রোডাকশনে আছে সুমনের আরেকটি বহুল আলোচিত সিনেমা ‘এমআরনাইন’। কাজী আনোয়ার হোসেনের জনপ্রিয় মাসুদ রানা সিরিজের ‘ধ্বংস পাহাড়’ উপন্যাস অবলম্বনে ‘এমআরনাইন’ নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হলিউড পরিচালক আসিফ আকবর। এই সিনেমাতেই কালজয়ী চরিত্র মাসুদ রানা হিসেবে দর্শকদের সামনে আসছেন এবিএম সুমন।

‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত দীপংকর দীপনের পরিচালনায় আবারো অভিনয় করছেন এবিএম সুমন। এবার এই নির্মাতা-অভিনেতা জুটিকে দেখা যাবে ‘অন্তর্জাল’ সিনেমায়। সিয়াম আহমেদ, বিদ্যা সিনহা সাহা, সুনেরাহ বিনতে কামাল এর সাথে একজন সিআইডি অফিসার হিসেবে হাজির হতে যাচ্ছেন সুমন।

অল্প সময়ের মধ্যেই দর্শক, পরিচালক, প্রযোজনা সংস্থা সহ সকল মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন তিনি। সেই গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে সামনে মুক্তির মিছিলে আছে অনেক আগেই কাজ শেষ হওয়া তানিম রহমান অংশুর ‘আদি’ সোহেল আরমানের ‘ভ্রমর’, মুক্তিযুদ্ধ কালীন গল্প নিয়ে নির্মিত ‘দাহকাল’। এছাড়া ‘গিরগিটি’ নামের একটি সিনেমাতেও দেখা যাবে সুমনকে। এই আলোচিত এবং প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলি মুক্তি পেলেই এক নতুন আস্থাশীল অভিনেতার দেখা পেতে যাচ্ছে ঢাকাই সিনেমা একথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

শুধু নামকাওয়াস্তে অভিনয়ের জন্য স্রোতে গা না ভাসিয়ে মানসম্মত এবং ভালো গল্পের সুস্থধারার সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার মধ্যে দিয়ে এই ডেডিকেটেড অভিনেতা এবিএম সুমন প্রমাণ করেছেন, তিনি অভিনেতা হিসেবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে এসেছেন, তারকা হিসেবে স্বল্প সময়ের খ্যাতির জন্য এখানে আসেননি। এই পরিশ্রমী এবং একই সাথে আমাদের সিনেমার প্রতি ভালোবাসা রাখা এবিএম সুমনের ধৈর্য্য এবং প্রতীক্ষার অবসান ঘটুক শিগগিরই এমনটাই চাওয়া৷ শুভ কামনা রইলো আমাদের ‘এমআরনাইন’ এর জন্য।

Ad