ইরা চরিত্রে দাগ কাটলেন আইশা খান

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

শিশুশিল্পী হিসেবে শোবিজে যাত্রা শুরু হবার পরে একটা সময় সিনেমাতেও কাজ করেছেন তিনি। তবে পরিনত বয়সে আলোচনায় আসেন ওয়েব সিরিজ ‘কন্ট্রাক্ট’ এর মাধ্যমে। তবে সম্প্রতি তিনি প্রশংসায় ভাসছেন সঞ্জয় সমদ্দারের ‘দাগ’ ওয়েব ফিকশনে অসাধারণ সুন্দর পারফরম্যান্স উপহার দেবার বদৌলতে। বলছি বা লিখছি এই সময়ের অন্যতম সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী আইশা খানের কথা।

‘দাগ’ এ একজন জীবন যুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়া তরুনী ইরা’র চরিত্রে আইশা খান শুধু আলো ছড়িয়েই গিয়েছেন যতোটা সময় স্ক্রিনে দেখা গেছে তাকে। না ঝকঝকে গ্ল্যামার বা মোহনীয় সৌন্দর্য দিয়ে নয় বরং নানা ধরনের লেয়ারের মধ্য দিয়ে ইরা চরিত্রটি সাবলীল এবং মনে দাগ কেটে যাবার মতো স্বতন্ত্র এক দক্ষতার সাথে স্ক্রিনে হাজির হয়েছেন আইশা। ট্রেলারে আইশা খানের চরিত্রটি নিয়ে একটা আগ্রহ থাকলেও ফিকশনে প্রথমে এক রহস্যময়ী নারী হিসেবে হাজির হয়েছেন তিনি। ডাস্টবিনে ফেলে যাওয়া একটি শিশুর দায়িত্ব যখন কোন দম্পতির কাছে সোপর্দ করা হবে এই নিয়ে ওসি আলমগীর রূপে মোশাররফ করিম জটিল সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তখন রহস্য ঘেরা একজন নারী হিসেবে আইশা খানের এন্ট্রি আলাদা মাত্রা নিয়ে আসে ফিকশনটিতে। একজন বাচ্চাকে কাছে পাবার জন্য একজন নারীর ব্যাকুলতা, চাওয়া এবং যেকোনো ভাবে বাচ্চাটার কাছাকাছি থাকার প্রবল ইচ্ছাধারী ইরা কখন যে আমাদের মনে দাগ কেটে যান তা আলাদাভাবে মনে রাখাই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। একজন অভিনেত্রী হিসেবে এখানেই তার স্বার্থকতা।

খুব স্বাভাবিকভাবেই যে ফিকশনে মোশাররফ করিমের মতো জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী অভিনেতা উপস্থিত আছেন সেখানে নবাগতা একজন অভিনেত্রীর জ্বলে উঠাটা এক কঠিন পরীক্ষা। চরিত্রের সাথে মানানসই লুক, কস্টিউম, বডি ল্যাংগুয়েজ, অভিনয় দক্ষতা সব কিছু মিলিয়ে সেই পরীক্ষায় লেটার মার্কস পেয়েই উতরে গেলেন আইশা খান। সঞ্জয় সমদ্দারের সুনিপুণ পরিচালনা, মোশাররফ করিমের মতো শক্তিশালী অভিনেতার অভিনয়ের জন্য ‘দাগ’ তো অবশ্যই বিনোদনপ্রমী হিসেবে দেখার আগ্রহের জাগায় তবে যারা এই ফিকশনটি দেখেছেন নিঃসন্দেহে আইশা খানের অভিনয় দক্ষতাও তাদের কাছে বাড়তি পাওয়া…

শৈশবে নাচের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আইশা। তারপর বেশ কিছু টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। তবে কলেজে উঠার পরে সেটা আর কন্টিনিউ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ‘আহত ফুলের গল্প’ নামের একটি সিনেমায় কাজ করেন।। ২০১৬ সালে বিজ্ঞাপন জগতে পা রাখেন তিনি। ২০২০ সালে ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’তে কাজের মধ্য দিয়ে আক্ষরিক অর্থে ফিকশনে যুক্ত হন। তবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘কন্ট্রাক্ট’ এর মাধ্যমে তার পরিচিতি বাড়ে। পরবর্তীতে ‘এ এমন পরিচয়’ নামের আরেকটি ওটিটি কনটেন্টে তাকে দেখা গেলেও ‘কাইজার’ এর মাধ্যমে আলোচনায় আসেন আবারো। মাঝে সঞ্চালনার কাজটিও করেছেন নিয়মিতভাবেই। তবে সঞ্জয় সমদ্দারের ওয়েবফিল্ম ‘দাগ’ নিঃসন্দেহে অভিনেত্রী আইশা খানের ক্যারিয়ারের এখন পর্যন্ত সেরা কাজ। ইরা চরিত্রে এতো বিশ্বাসযোগ্য এবং সাবলীলভাবে উপস্থাপন করেছেন নিজেকে যা প্রশংসার দাবিদার।

ওটিটির কল্যানে অনেক প্রবীন অভিনয় শিল্পী যেমন নতুন করে নিজেদের প্রতিভা আর যোগ্যতার জানান দিয়েছেন নতুন করে। তেমনি বেশকিছু সম্ভাবনাময় নবীনের দেখাও পেয়েছি আমরা। সেই লিস্টে আইশা খান নিঃসন্দেহে নিজের স্থান করে নিয়েছেন বেশ ভালোভাবেই। সামনের দিনে তাকে নিয়ে আমাদের গল্পকার এবং নির্মাতারা ভাববেন নতুন করে সেটাই কাম্য।

Ad