স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’ মুক্তিযুদ্ধের একটি দলিল

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন আমরা। ৯ মাসের দীর্ঘ এক যুদ্ধ শেষের দিকে। কোটি কোটি বাঙ্গালি নতুন এক স্বাধীন দেশে নিজের মতো করে জীবন শুরু করার স্বপ্নে বিভোর। সেই সময়টায় পরাজিত শক্তি এবং তাদের দোসররা মিলে এক ন্যাক্কারজনক বীভৎস ঘটনার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে মরিয়া। আর যেদিন সেই নীল নকশা প্রনয়ণ করা হয়েছিলো সেটি ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১। নিশ্চিত পরাজয় টের পেয়ে দেশ স্বাধীন হবার মাত্র দুইদিন আগে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় পরিকল্পিতভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছিলো।

সেই সত্য ঘটনা অবলম্বন করে হাসানাত বিন মাতিনের গল্পে
তরুন এবং মেধাবী নির্মাতা সৌরভ কুন্ডু নির্মাণ করেছেন শর্টফিল্ম ‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিকশনের মূল ভাবনা আমিনুল ইসলাম ইমনের। আপ স্টুডিওর ব্যানারে নির্মিত শর্টফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন হামিদুল হাসান নবীন। অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, পূর্ণিমা বৃষ্টি, জে. আই মোহসান, বিপুল, টিপু, আনিকা তাবাসসুম ও ইমতিয়াজ।

‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’ নিয়ে নির্মাতা বলেন,‘বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এটি নির্মাণ করেছি। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ‍্যে পাকিস্তানিরা এদেশের দেশদ্রোহীদের সহযোগিতায় যে হত‍্যাযজ্ঞ চালায় তারই একটা রেশ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি ছোট্ট এই কাজের মধ‍্য দিয়ে।

এই স্বল্পদৈর্ঘ্য ফিকশনে কিংবদন্তি শহীদুল্লাহ কায়সারের চরিত্রে দেখা মিলেছে দেশের অন্যতম প্রশংসিত অভিনেতা রওনক হাসানকে। সত্তর দশকের সময়কার একজন বিবেকবান, শিক্ষিত এবং স্বাধীনতাকামী সেই মহান ব্যক্তির চরিত্রে অল্প সময়েই তার অভিনয় দক্ষতা মুগ্ধ করে আমাদের। সাথে তার স্ত্রী পান্না কায়সারের ভূমিকায় পূর্ণিমা বৃষ্টিও ছিলেন অসাধারণ।

গতকাল রাতেই আপ স্টুডিও প্রডাকশন হাউস অ্যান্ড পাবলিকেশনের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ দেয়া হয়েছে সাড়ে চার মিনিটের এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি। ইতিমধ্যে যারা যারা এটি দেখেছেন প্রত্যকেই প্রশংসা করেছেন বুদ্ধিজীবীদেরকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছা থেকে এমন একটি নির্মানের। আগামী প্রজন্ম তো বটেই এই সময়ের কিশোর এবং তরুনদের মধ্যেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সমগ্র দেশজুড়েই চলা নানা সহিংসতা, হত্যা এবং ত্যাগের সত্য গল্পগুলো পৌছে দেয়ার যে গুরুত্ব সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’ নিঃসন্দেহে একটি সুন্দর এবং যুগোপযোগী প্রচেষ্টা।

 

Ad