এই বছরের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি – গায়ক অজয় রায়

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্বপূর্ণ নানা ঘটনার সাক্ষী হয়েই আর দুইদিন পরেই সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে ঘটনাবহুল ২০২২ সালের। অনেকদিন পরে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ঘুরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ভিন্নধর্মী বেশকিছু ফিকশনের বদৌলতে বিনোদনপ্রেমীদের নতুন ভালোলাগার জায়গা হিসেবেও আলোচনায় ছিলো ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো। চলচ্চিত্র এবং ওটিটির এই সাফল্যের রেশ ছিলো সংগীত অংগনেও। বেশকিছু জনপ্রিয় এবং প্রশংসিত গান যেমন আমরা পেয়েছি এই বছরে তেমনি দেখা মিলেছে বেশকিছু দক্ষ এবং প্রতিভাবান গায়ক-গায়িকাদের। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ক্ল্যাসিক্যাল ঘরানাকে নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার অন্যতম কারিগর গায়ক অজয় রায়।

জনপ্রিয় নির্মাতা ভিকি জাহেদ পরিচালিত ‘চিরকাল আজ’ নামক ফিকশনের শ্রুতিমধুর গান ‘রিমঝিম বৃষ্টি ঝরে যায়’ এর জন্য সেরা গায়ক হিসেবে দেশের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস পুরস্কারের চূড়ান্ত পর্যায়ে মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকায় জায়গা করে নিয়ে রীতিমতো চমকে দেয়া নবীন গায়ক অজয় রায় এই বছরেই আরো বেশকিছু শ্রুতিমধুর গান নিয়ে আলোচনায় ছিলেন সারা বছরেই।

ভিকি জাহেদের পরিচালনায় আলোচিত ফিকশন ‘পূর্ণজন্ম’ এর তিনটি কিস্তিতেই তার গাওয়া গানগুলি রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় সংগীত অংগনে। “দ্রোহে জ্বলে পুরে”, “সময় হেরে গেছে” বা ‘‘পূর্ণজন্ম’’ এই তিনটি গানই জনপ্রিয়তা পাবার পাশাপাশি প্রশংসাও কুড়িয়েছে সুধীজনদের। পাশাপাশি একই নির্মাতার ওয়েবফিল্ম ‘শুক্লপক্ষ’তে ‘ঘুন’ শিরোনামের গানটির মাধ্যমেও আলোচনায় ছিলেন অজয় রায়। ‘শেষ দেখা’ নাটকের ‘শুনতে পারোনি’ গানটাও আলোচনায় আসে। এছাড়া ‘লিলুয়া’ নাটকের জনপ্রিয় ‘পাহারা’ গানটিও তাকে গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।

তবে শুধু ফিকশনেই নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি এই প্রতিশ্রুতিশীল ক্ল্যাসিক্যাল ঘরানার প্রতিভাবান গায়ক অজয় রায়। দূর্গা পূজা উপলক্ষে ‘মহাদেব’ নামক গানেও নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন বেশ সাবলীলভাবেই। তব তার গায়কী এবং মেধার কল্যানেই বর্তমান সময়ে ফিকশন গুলোতে গায়ক হিসেবে আস্থার আরেক নাম অজয় রায় একথা বললেও ভুল হবেনা। সামনেই বেশকিছু গান নিয়ে হাজির হচ্ছেন এই গুণী শিল্পী। এরই ধারাবাহিকতা সম্প্রতি প্রথমবারের মতো একটি মিউজিক ভিডিওতেও মেধাবী সুরকার শোভন রায়ের সুর এবং প্রখ্যাত গীতিকার প্রসেনজিৎ ওঝার কথায় একটি ভিন্নরকম গান নিয়ে হাজির হচ্ছেন খুব শিগগিরই এমনটাই জানালেন তিনি।

গানের প্রাকটিস খুব ছোটবেলা থেকেই করে আসছেন অজয়। এখনো সেই প্রাকটিস করেন তিনি নিয়ম করেই। নজরুল ঘরানার গানেই নিজেকে সপে দেয়া এই তরুন শিল্পী সব ধরনের গানেই নিজের দক্ষতা এবং মেধা যেমন তুলে ধরতে চান তেমনি ক্ল্যাসিক্যাল ঘরানায় তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে বোধ করেন বেশি এটাও জানান অকপটে। কারন এই ক্ল্যাসিকাল চর্চাই শিল্পী হিসেবে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এক স্বতন্ত্র জায়গায় তেমনটাই বিশ্বাস তার। তবে অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে এই জায়গা পর্যন্ত আসার পেছনে পরিবার বা কাছের মানুষজন ছাড়াও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান নির্মাতা ভিকি জাহেদ এবং সুরকার মাহমুদ হায়াত অর্পণের প্রতি। কারন এই ত্রয়ীর জুটির কল্যানেই আমরা পেয়েছি বেশকিছু ভিন্নধর্মী গান।

নতুনের কেতন উড়িয়ে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক তরুণ-তরুণীর আগমন ঘটে প্রতিনিয়ত। তবে নিজের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে শুধুমাত্র স্রোতে গা না ভাসিয়ে যারা চর্চা এবং অনুশীলন চালিয়ে যাবার অদম্য মনোবলে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় দিনশেষে তারাই টিকে থাকে বা বলা উচিত টিকে যায়। অজয় রায় এই বছরের মতো সামনের দিনেও তার অসাধারণ গায়কীর মাধ্যমে শ্রুতিমধুর গান উপহার দিয়ে আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে এই কামনা রইলো।

Ad