‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে নাসির উদ্দিন খান

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

পাশ্চাত্যর কথা বাদ দিয়ে পাশের দেশের হিন্দি সিনেমার দিকে তাকালেই আমাদের সামনে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী, ইরফান খান বা পংকজ ত্রিপাঠিদের মতো অসংখ্য অভিনেতাদের দেখা যায় যাদের বলিউডে শুরুটা হয়েছিলো ছোট্ট একটি চরিত্র দিয়ে কিন্তু সময়, অভিজ্ঞতার সাথে পরিশ্রম এবং মেধার মিশ্রনে এদের প্রত্যকেই নিজেদের অভিনয় প্রতিভার এমন উদাহরণ রেখেছেন যা অনবদ্য এবং অসাধারণত্ব নিয়ে হাজির হয়েছে আমাদের সামনে।

আমাদের দেশেও বেশকিছু অভিনেতা আছেন যারা ক্যারিয়ারের শুরুতে এমন স্বল্প সময়ের উপস্থিতি দিয়েই নিজেদের জাত চেনাতে সক্ষম হয়েছেন। সেই লিস্টের সাম্প্রতিক উদাহরণ শক্তিশালী অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। তৌকির আহমেদের হালদা সিনেমাতে তাকে দর্শকদের মাঝে কতোজন খেয়াল করেছিলো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারে তবে তানিম রহমান অংশুর ‘ন ডরাই’তে তিনি ছিলেন অনবদ্য এরপরেই সৈয়দ আহমেদ শাওকির ‘তাকদীর’ নামক ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে ক্যামেরার পেছনের মানুষদের কাছে তার প্রতিভার খবর পৌছে গিয়েছিলো। তবে আক্ষরিক অর্থে পরিচিতি এনে দিয়েছিলো আশফাক নিপুণের ‘মহানগর’ ওয়েব সিরিজের ‘রূপালীর প্রেমিক’ চরিত্রটির কল্যানে।

 

সময়ের সাথে সাথে মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’, রায়হান রাফির ‘পরাণ’, ‘ফ্রাইডে’ একের পর ফিকশনে নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখে যাওয়া নাসির উদ্দিন খান দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে জায়গা করে নিতে থাকেন। চলচ্চিত্র এবং ওটিটি দুই প্ল্যাটফর্মেই মন জয় করা পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে আলচনায় আসেন নাসির উদ্দিন খান। তবে শিহাব শাহীনের ‘সিন্ডিকেট’ ওয়েব সিরিজের ‘অ্যালেন স্বপন’ চরিত্রটি নাসির উদ্দিন খানের ক্যারিয়ারের এখন পর্যন্ত সেরা মাইলফলক বলে গন্য করা হয়।

‘সিন্ডিকেট’ একভাবে দেখতে গেলে ওয়ান ম্যান মানে আফরান নিশো শো হলেও স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতে ‘অ্যালেন স্বপন’ চরিত্র দিয়ে আলাদাভাবে নজর কাড়া নাসির উদ্দিন খান এবার সেই চরিত্রের নাম নিয়ে নির্মিত পূর্ণাঙ্গ সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ এর মূল ভূমিকায় হাজির হচ্ছেন দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। ব্যাপারটা একভাবে দেখতে গেলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে একজন দক্ষ এবং মেধাবী অভিনেতা হিসেবে নাসির উদ্দিন খান বেঞ্চমার্ক তৈরী করে ফেললেন রীতিমতো। ফিকশনে সাইড ক্যারেক্টর বা ক্যারেক্টর আর্টিস্ট ক্যাটাগরিতে যাদের কাস্ট করা হয় সেই জায়গা থেকে একদম মূল ভূমিকায় আবির্ভাব হওয়ার বিষয়টা সম্ভব হয়েছে ওটিটির কল্যানে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যেখানে ‘কনটেন্ট ইজ কিং’। তবে আমাদের ভিউ বা জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বিচার করে ফিকশনে কাস্ট করার যে গতানুগতিক হাওয়া বইছিলো তার বিপরীতে নাসির উদ্দিন খানের এমন উত্থান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। একই সাথে প্রশংসা বা অভিবাদন জানাতে হয় নির্মাতা শিহাব শাহীন এবং তার টিমকে। যারা গল্প এবং চিত্রনাট্যর চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ শিল্পীকে কাস্ট করার সাহস বা চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় এই ভিন্নতা এবং ব্যতিক্রমী চিন্তা নিয়ে নির্মিত ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ আমাদের কতোটা বিনোদিত করতে সক্ষম হয়…..

Ad