ইরান বা তুরান নয়, তিনি আমাদের এই আন্তঃনগরের প্রান্তর
আফজালুর ফেরদৌস রুমন
ওটিটির কল্যানে বেশকিছু প্রতিভাবান এবং দক্ষ অভিনয় শিল্পীর সাথে আমাদের দর্শকদের পরিচয় ঘটেছে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ তরুন অভিনেতা প্রান্তর দস্তিদার। বেশকিছু টিভিসি, ওভিসি, মিউজিক ভিডিও এবং বিলবোর্ডে নজর কাড়ার পরে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়েবফিল্ম ‘আন্তঃনগর’ দিয়ে সাধারণ দর্শকদের কাছে পরিচিতি এবং প্রশংসা দুটোই পেয়েছেন এই মেধাবী এবং ডেডিকেটেড তরুন অভিনেতা।
প্রথম দেখায় ইরান, ইরাক বা তুরস্কের কোনো তরুন মনে হলেও প্রান্তর পুরোদস্তুর বাংলাদেশী। যার লুক, চাহনী, ফ্যাশন সেন্স এবং ফিটনেস তরুন অভিনেতা হিসেবে তাকে আর অন্য দশজন থেকে সহজেই ভিন্নতা এনে দিয়েছে। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিইসিতে গ্রাজুয়েশন করার সময়ই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ের সাথে যুক্ত হয়ে যান প্রান্তর৷ এভাবেই মিডিয়ার সাথে তার সংপৃক্ত হওয়া। করোনা সময় পার করার সাথে সাথে গ্রাজুয়েশন শেষের পরে প্রান্তর জুনিয়র প্রডিউসার এবং কনটেন্ট প্ল্যানার হিসেবে একটি এজেন্সিতে যোগ দেন তিনি। এভাবে এই জগতে কাজের মায়ার পড়ে যান প্রান্তর।
প্রথমদিকে ছোট পরিসরে নিজের কাছের মানুষজনের ফিকশনে অল্পস্বল্প ভাবে অভিনয় করলেও এই মিডিয়াতে অভিনেতা হিসেবে নিয়মিত কাজ করবেন তখনো সেই চিন্তা বা ইচ্ছা কোনোটাই ছিলোনা প্রান্তর দস্তিদারের। তবে গৌতম কৈরীর ‘আন্তঃনগর’ এ কাজ করার অভিজ্ঞতা অভিনেতা হিসেবে প্রান্তরের নিজের কাছেই ভিন্নভাবে চিন্তা করার দরজা খুলে দিয়েছে তার কাছে। এবং সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রান্তর দস্তিদার এখন অভিনয় বিষয়টা ভালোবেসে ফেলেছেন মন থেকে। অ্যান্থোলজিক্যাল ফিল্ম ‘আন্তঃনগর’ এ একটি গল্পে ফটোগ্রাফার শুভ হিসেবে নবাগত প্রান্তর দস্তিদার যেনো ধুমকেতুর মতোই হাজির হয়েছেন আমাদের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে। যারাই এই ওয়েবফিল্মটি দেখেছেন তারাই শুভ চরিত্রে প্রান্তরের অভিনয় দক্ষতার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি এই ফিকশনে পূর্ণিমা চরিত্রে নিদ্রার সাথে তার জুটিও ছিলো আলোচনায়। সবমিলিয়ে প্রথম ফিকশন দিয়েই নিজের প্রতিভার জানান দিলেন চকোলেট বয় ইমেজ ধারণ করা প্রান্তর দস্তিদার।
অভিনয়টাকে আরো ভালোভাবে বুঝতে এবং শিখতে তিনি সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন দেশের অন্যতম প্রশংসিত এবং আলোচিত থিয়েটার ‘প্রাচ্যনাট’এ। ক্যামেরার পেছনের মানুষটার কাছে এখন অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টাই একটা চ্যালেঞ্জ।
গুণী নির্মাতা, ভালো গল্প, ব্যতিক্রমী চরিত্র পেলে সামনের দিনে প্রান্তর দস্তিদার যে অভিনেতা হিসেবে নিজের যোগ্যতার প্রমান রাখতে সক্ষম হবেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। নিজের পরিশ্রম, ডেডিকেশন এবং প্রতিনিয়ত ভালো কাজ করার ইচ্ছা এবং চাওয়া ধারণ করা এই তরুন অভিনেতার জন্য রইলো শুভকামনা।