ইলেকট্রিক্যালে ডিপ্লোমা পড়ুয়া জোবায়ের আবীর পিয়াল ইন্ডাস্ট্রির এই সময়ের আস্থাশীল এডিটর!

সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত এবং জনপ্রিয় ওটিটি কনটেন্ট গুলোর মধ্যে বেশকিছু সিরিজ এবং ওয়েব ফিল্মের এডিটর হিসেবে অসাধারন মুন্সিয়ানা দেখিয়ে জোবায়ের আবির পিয়াল ইতিমধ্যে নিজের দক্ষতার জানান দিয়েছেন। আগষ্ট ১৪, মহানগর, এক ডিশ দুই কুক, মরীচিকা, সাবরিনা, সিন্ডিকেট, মহানগর টু, আমি কি তুমি’র মতো আলোচিত ওয়েব কনটেন্টের এডিটর হিসেবে কাজ করা জোবায়ের আবির পিয়ালকে নিয়ে এই বিশেষ ফিচার।

জোবায়ের আবীর পিয়াল সম্পাদনের শুরুটা কিভাবে তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সম্পাদনার হাতে খড়ি ২০০৪ সালে স্কুলে পড়ার সময়। ওয়াল্টার মার্চ আমার পছন্দের এডিটর।” মিডিয়া এবং বিনোদন শিল্পে তার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা এবং লিনিয়ার এবং নন-লিনিয়ার এডিটিংয়ে অত্যন্ত দক্ষ এই তরুন দেশীয় বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন বেশ ভালোভাবেই…

১৯৯১ সালের ১০ জানুয়ারী জয়পুরহাটে জন্ম পিয়ালের। সেখানেই বড় হওয়া। সময়ের ধারাবাহিকতায় একটা সময় বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করে পরবর্তীতে শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আসেন…. এরপর কর্ম জীবনে পদার্পণ। পিয়াল বলেন- “২০১২ সালে প্রথম কাজ শুরু করি। শ্রদ্ধেয় ইকবাল কবির জুয়েল ভাইকে এসিস্ট করতাম। বেশ কিছু বিজ্ঞাপন ও গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভাইয়ের ‘রোদ’ ধারাবাহিকের সরকারি সম্পাদক ছিলাম। ২০১৩ সালে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে মেগা সিরিয়াল ‘লোটা কম্বল’ দিয়ে আমার সম্পাদনা যাত্রা শুরু হয়। এরপর শুধুই নিজের ছাপ রাখার একটা প্রচেস্টা। কতোটুকু সফল হয়েছি তা ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন ভালো জানে, তবে অনেক সাধারণ দর্শকও অভিনেতা, অভিনেত্রী বা নির্মাতার পাশাপাশি এডিটর কে ছিলেন সেটা যখন জানতে চায় তখন মনে হয় কিছু অন্তত ভালো কাজ করতে পেরেছি। এটাই তো আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি…..

২০১৪ সাল থেকে আলফা আই মিডিয়া প্রোডাকশন লিমিটেড- চিফ এডিটর অ্যান্ড আই টি হেড হিসেবে কাজ করেছেন। শিহাব শাহিনের ভালবাসার পংক্তিমালা, মিজানুর রহমান আরিয়ানের কথোপকথন, গৌতম কৈরীর শেষটা একটু অন্যরকম, মাহমুদুর রহমান হিমি’র নিঃশ্বাস সহ বেশ কিছু কাজ দর্শক জনপ্রিয়তা পায় যেগুলোতে তিনি যুক্ত ছিলেন।

তবে আক্ষরিক অর্থে জোবায়ের নিজের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে উল্লেখ করেন শিহাব শাহীননের’র পরিচালনায় ক্রাইম থ্রিলার ওয়েব সিরিজ “আগস্ট ১৪” কে। সেই সিরিজের মাধ্যমে তার মেধা এবং দক্ষতা সম্পর্কে আলোচনা এবং প্রশংসার ভেসেছেন তিনি। মূল ভূমিকায় তাসনুভা তিশাকে নিয়ে সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানানো এই ফিকশন ওটিটির প্রতি আমাদের দর্শকদের আগ্রহী করে তুলেছিলো। বিঞ্জে মুক্তি পাওয়া এই ফিকশনক্টির সাফল্যের ভাগ এডিটর জোবায়ের আবির পিয়ালও পেয়েছিলেন ভালোভাবেই। এই ফিকশন দিয়েই ওটিটিতে তার পথচলার শুরু। একে একে মহানগর, এক ডিশ দুই কুক, মরীচিকা, সাবরিনা, সিন্ডিকেট, মহানগর টু, আমি কি তুমি’র মতো অসাধারণ জনপ্রিয়তা এবং প্রশংসা পাওয়া ফিকশনে তার কাজ নজরে আসে।

ওটিটি মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারের সম্পর্কে বলতে গেলে তিনি জানান ” বিশ্বের অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও এখন ওটিটিতে সাফল্য ইতিমধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি। নান্দনিক নির্মান, অভিনয় দক্ষতা এবং ক্যামেরার পেছনের মানুষগুলোর ভালো কিছুর করার চেস্টা এই মাধ্যমকে অনেক কিছুই এনে দিচ্ছে যা কয়বছর আগেও চিন্তা করা যেতোনা। আমি বিশ্বাস করি একদিন আমরাও বিশ্বমানের কনটেন্ট বানাবো এবং বাংলা কনটেন্ট বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে।”

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি ব্লেন্ডার’স চয়েস- দ্য ডেইলি স্টার ওটিটি এন্ড ডিজিটাল কনটেন্ট অ্যাওয়ার্ডস ২০২২ (OTT DC AWARDS) এ বেস্ট এডিটিং ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন এই মেধাবী তরুন। তুমুল জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘সিন্ডিকেট’ এডিট এর জন্য নমিনেশন পেয়েছেন এই তরুণ সম্পাদক জোবায়ের আবীর পিয়াল। পুরস্কার হাতে উঠবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে তবে এই মনোনয়ন প্রাপ্তি প্রমান করে নিজের দক্ষতা এবং মেধার জোরে নিজেকে চেনাতে সক্ষম হয়েছেন এই এই তরুণ সম্পাদক।

তবে শুধু ওটিটি নয় বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম মানে চলচ্চিত্রেও এডিটর হিসবেএ খুব শিগগিরই দেখা যাবে জোবায়ের আবীর পিয়ালকে বলে জানিয়েছেন। অফিশিয়াল ঘোষনা না আসা পর্যন্ত নাম বা কিছুই শেয়ার না করলেও সিনেমাতে বেশ কয়েকটা কাজ লক হয়ে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জোবায়ের আবীর পিয়াল এভাবেই আলো ছড়িয়ে যাবেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এটাই চাওয়া। এই হাস্যজ্বল তরুনের আগামী দিনগুলোর জন্য শুভ কামনা রইলো।

Ad