প্রার্থনায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
আফজালুর ফেরদৌস রুমন : বাঙালির কাছে তিনি কখনো ‘অপু’ আবার কখনো তিনি মানেই ‘ফেলুদা’। সেই পঞ্চাশের দশকে সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন কেড়েছিলেন যে অভিনেতা, সেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এতো বছর পরেও অভিনেতা হিসেবে এতোটুকু ম্লান হননি। বরং একের পর এক সফল সিনেমাতে অভিনয় দক্ষতার ছাপ রেখে চলেছেন। ৮৫ বছর বয়সেও মঞ্চ আর চলচ্চিত্র দুই ক্ষেত্রেই সক্রিয় তিনি। জীবন্ত এই কিংবদন্তি অভিনেতা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হলেন।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার কলকাতার নামকরা বেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি হন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়। যে কোন সময় ভেন্টিলেশনে দিতে হতে পারে বলে চিন্তা ভাবনা করেন চিকিৎসকরা।
পর পর দু’দিন তাকে প্লাজমা দেওয়া হয়। সোমবার রাতে নতুন করে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে লাইফ সাপোর্ট ভেন্টিলেশন দিতে হয়। বেলভিউয়ের ১০জন চিকিৎসক এবং কলকাতার অন্য সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে আরও ৬ জন চিকিৎসক মিলিয়ে মোট ১৬ জনের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
সারা বিশ্বে বাংলা সিনেমার দর্শকদের প্রার্থনা যেনো বিফলে যায়নি এমনটাই ধারনা করা হচ্ছে। করোনা পজিটিভ হওয়ার ১৪ দিনের মাথায় ফের তাঁর পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট এসেছে নেগেটিভ। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চোখও খুলেছেন তিনি।
ছয় দশকের বেশি অভিনয়জীবন হলেও নিজেকে এখনও বলেন থিয়েটারের মানুষ। তাঁর দরাজ কণ্ঠের আবৃত্তি শ্রোতাকে মুগ্ধ করে এখনো। এই মুগ্ধতা আরো অনেকদিন আমাদের মাঝে থাকবে এটাই কামনা। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক আমাদের ‘অপু’ বা আমাদের ‘ফেলুদা’ এটাই কামনা। শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রইলো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্য। উনার অনেক কাজ যে এখনো বাকি, আমাদের আরো অনেক মুগ্ধ হওয়া যে এখনো বাকি!