৪৭ বছরে সবুজ নয়না ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
আফজালুর ফেরদৌস রুমন : ১৯৯৯ এবং ২০০২ সালে ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ এবং ‘দেবদাস’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। ‘মোহাব্বতে’ সিনেমার জন্য পেয়েছেন সেরা সাপোর্টিং অভিনেত্রীর পুরস্কার। ২০০৯ সালে তার অসামান্য অভিনয় দক্ষতার কারণে তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী সম্মাননা অর্জন করেন।
২০১২ সালে অর্জন করেন ফ্রান্সের অরড্রি ডেস আর্টস অ্যাট ডেস লেট্রিস পুরস্কার। এখানেই শেষ নয়, ২০০৪ সালে বিখ্যাত মাদাম তুসোর জাদুঘরে তার প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়। নেদারল্যান্ডের কেউকেনহফ গার্ডেনে তার নামে একটি টিউলিপ ফুলের নাম রাখা হয়। ফ্রান্সেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
সালমান খান এবং বিবেক ওবেরয়ের সাথে প্রেম থাকলেও শেষমেশ সব অতীতকে পিছনে ছাপিয়ে ২০০৭ সালের ২০শে এপ্রিল বলিউড অভিনেতা অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করেন ঐশ্বরিয়া। যদিও তাঁদের এই প্রেম পর্ব শুরু হয়েছিল আরো আগেই। ২০০৬ সালে ‘উমরাও জান’ সিনেমাতে জুটি বেঁধেছিলেন অভিষেক-ঐশ্বরিয়া।
মূলত ছবির শুটিংয়ের সময় ঐশ্বরিয়ায় মুগ্ধ হয়েছিলেন অভিষেক। এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক জানান, ২০০৭ সালের জানুয়ারীতে এই ‘বিশ্বসুন্দরী’কে নিজের মনের কথা জানান অভিষেক। ঐশ্বরিয়ার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বেশিদিন লুকোচুরি করেননি তারা। ফেব্রুয়ারিতে অর্থাৎ পরের মাসেই অভিষেক বচ্চন মিডিয়ায় তাদের প্রণয়ের কথা স্বীকার করেন।
২০০৭ সালেই পরিনয়ে বাধা পড়েন এই দুই তারকা। এরপর ২০১১ সালে অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার প্রথম মেয়ে সন্তান আরাধ্য বচ্চনের জন্ম হয়। এরপর মেয়েকে সময় দিতে ঐশ্বরিয়া মিডিয়া থেকে কিছুটা দূরে চলে যান।
যে চোখে থেমে যায় গোটা পৃথিবী, পলক পড়লেই দিন হয়ে যায় রাত এমন মোহনীয় চোখের অধিকারী পৃথিবীতে হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের মধ্যেই একজন হলেন বলিউডের ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। ঐশ্বরিয়ার চোখের আকর্ষণীয় চাহনি, চোখের সবুজাভ রংয়ে ভিন্নতা, এবং চোখের ভাষায় কোটি ভক্তের জীবন আটকে গেছে।
এই চোখ জোড়া একবার নয়,বহুবার সিনেমা দর্শকদের মন কেড়েছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন মরণোত্তর নিজের চোখ দান করেছেন। ‘আই এসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’কে নিজের চোখ দান করেছেন বলিউড ডিভা ঐশ্বরিয়া। দানের প্রসঙ্গ যখন এলো তখন এটাও জেনে রাখা ভালো বলিউডের দানবতীদের মধ্যে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন অন্যতম। নিজের একটা চ্যারিটি ফাউন্ডেশনও রয়েছে তাঁর।
অনেকেই আরেকটি বিষয় হয়তো জানেন না যে, ঐশ্বরিয়া রাইয়ের প্রথম বিবাহ একটি গাছের সাথে হয়েছিল! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে হয়ত। সনাতন হিন্দু মতে, যেসব মেয়েরা মাঙ্গোলিক হয় অর্থাৎ বিয়ের পরই যাদের স্বামী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদের প্রথমে গাছের সাথে বিবাহ দিয়ে সেই গাছ কেটে ফেলা হয়। এতে সেই মেয়ের স্বামীর উপর থেকে অভিষাপ দূর হয়।
ঐশ্বরিয়া রাই একজন মাঙ্গোলিক ছিলেন বলে জানা যায়। তাই অভিষেকের সাথে সাত পাকে বাধা পড়ার আগে একটি গাছের সাথে বিয়ে হয়েছিল তার। কিছুদিন আগে পুরো বচ্চন পরিবার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলো। ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং করোনা যুদ্ধ ও জয় করেছেন তিনি।
সিনেমায় দেখা না গেলেও টেলিভিশন বা মডেলিং জগতে আজো তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় এক নাম। ঐশ্বরিয়া রায় বিশ্বখ্যাত ল’রিয়ালের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এছাড়া টাইটান ঘড়ি, কোকাকোলা, ল্যাকমে বিউটি প্রোডাক্ট, নক্ষত্র ডায়মন্ড, কল্যাণ জুয়েলার্স সহ নানান প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনে কাজ করছেন।
এখন পরিবার এবং মেয়েকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। তবে পছন্দসই স্ক্রিপ্ট পেলেই আবারো লাইট ক্যামেরার সামনে দাড়াবেন একথা জানিয়েছেন তিনি। তবে তার ভক্ত এবং অনুরাগীদের অপেক্ষার পালা হয়তো খুব লম্বা হবেনা।কারন মনি রত্নমের আগামী সিনেমায় ডাবল রোলে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আবারো রুপালি পর্দায় ফিরছেন এই সবুজ নয়না।