আমান রেজার ‘হাফ সেঞ্চুরি’

আফজালুর ফেরদৌস রুমন : এই সময়ে কয়েকজন অভিনেতা তাদের কাজ দিয়ে মিডিয়াতে আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আমান রেজা। সুদর্শন এই অভিনেতা মিডিয়াতে কাজ করছেন প্রায় এক যুগ ধরে। তার শুরুটা বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সিনেমার মাধ্যমেই।

একদমই হঠাৎ করে ২০০৮ সালে একটি স্টুডিওতে একজন ফটোগ্রাফারের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রযোজক গোলাম মোরশেদের সাথে পরিচয় হয় তার। সেই ধারাবাহিকতায় পরিচালক হাফিজ উদ্দিন পরিচালিত ‘সেই তুফান’ সিনেমাতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের বিশাল মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন আমান।

তবে প্রথম অভিনীত সিনেমা ‘সেই তুফান’ হলেও মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা রেজা লতিফের ‘ভালোবাসার শেষ নেই’। সেই থেকেই মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে পদচারণা তার। মিডিয়া নিয়ে পারিবারিক কোন ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলেও অভিনয় দক্ষতা, কাজের প্রতি ভালোবাসা তাকে আস্তে আস্তে আলোচনায় নিয়ে এসেছে।

ইতিমধ্যে তার ১ যুগের ক্যারিয়ারে প্রায় ৪০টির মতো সিনেমাতে অভিনয় করেছেন আমান। তবে এখন পর্যন্ত প্রায় ত্রিশটির মতো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তার। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় এবং যৌথ প্রযোজনার সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন আমান। এছাড়া যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশ প্রযোজিত আলোচিত এবং প্রশংসিত সিনেমা ‘সংগ্রাম’ তার অভিনয় জীবনের অন্যতম সেরা একটি কাজ।

তবে সিনেমা ছাড়াও এখন ছোট পর্দায় কনটেন্ট এবং চরিত্র মনমতো হলে এই মাধ্যমেও কাজ করছেন তিনি। সিনেমা, নাটক, টিভিসি সহ বিনোদনের প্রায় সকল সেক্টরেই এখন কাজ করছেন তিনি। তবে এই কাজ করার মধ্য দিয়ে সম্প্রতি বাপ্পা মাহমুদ এর পরিচালনায় প্রাণ ফ্রুট বিজ্ঞাপন এর একটি টিভিসিতে কাজ করলেন তিনি। এবং বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে ক্যারিয়ারের ৫০তম বিজ্ঞাপনে কাজ করলেন তিনি।

দেখতে দেখতে অর্ধশত বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার অনুভূতি জানাতে যেয়ে আমান জানান, আমি কৃতজ্ঞ স্রষ্টার কাছে আমার পিতামাতা এবং পরিবারের অন্যসব সদস্যদের কাছে। এর বাইরে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেইসব মানুষদের যাদের সাথে কাজ করে প্রতিনিয়ত আমি শিখছি। প্রতিটি প্রযোজক, পরিচালক বা এজেন্সির কাছেও কৃতজ্ঞ যারা আমার উপর আস্থা রেখে আমাকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করছে।

আর ভালোবাসা সেই সব দর্শকদের জন্য যাদের ভালোবাসা আজ আমাকে এতোদূর নিয়ে এসেছে। আশাকরি নিজের কাজ, পরিশ্রম এবং দক্ষতা দিয়ে সামনেও আমি তাদের ভালোবাসা এবং আস্থার মর্যাদা রাখতে পারি। সামনে বেশকিছু ভিন্নধর্মী কাজ নিয়ে হাজির হচ্ছেন আমান। হাতে রয়েছে বেশকিছু প্রজেক্ট যেগুলো মুক্তি পেলে দর্শকেরা একজন নতুন আমান রেজাকে দেখতে পাবে৷

মিনহাজ কিবরিয়া পরিচালিত ‘বিফোর আই ডাই’, জয়া আহসান ও ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কলকাতার সিনেমা ‘ঝরা পালক’, জয় ভট্টাচার্য পরিচালিত আরেকটি কলকাতার আরেকটি সিনেমা ‘জোকার’, রকিবুল আলম রকিব পরিচালিত ‘ইয়েস ম্যাডাম’, মিনহাজ কিবরিয়া পরিচালিত ‘শতরূপে শতবার’ এবং ‘বিফোর আই ডাই’, এছাড়া ‘অন্ধকার জগৎ’ নামের আরেকটি সিনেমার শ্যুটিং শেষ হয়েছে। উল্লেখ্য এর মধ্যে ‘জোকার’ সিনেমাটি বাংলা ও হিন্দি দুই ভাষাতেই নির্মান হচ্ছে। এছাড়া সামনে শ্যুটিং শুরু হবে ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ‘মুক্তি’ সিনেমার।

ব্যক্তিজীবনে আমান রেজা ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এখন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবেও কাজ করছেন। এছাড়া দেশের বাইরে তার নিজস্ব কিছু ব্যবসা রয়েছে। সব মিলিয়ে অনেক কিছু নিয়ে ব্যস্ত তিনি।

তবে এতোসবের মাঝে ভালোবাসার জায়গাটা অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। কারন এই কাজটার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন সেটার সাথে অন্যকিছুর তুলনা হয়না। শুভ কামনা রইলো এই পরিশ্রমী এবং মেধাবী অভিনেতার জন্য।

Ad