এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায়

নিউজ ডেস্ক : চলে গেলেন বরেন্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। গতকাল সকাল ৯.০৬ মিনিটে সূত্রাপুরের নিজ বাসায় না শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে, না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি। গত বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এটিএম শামসুজ্জামানকে। তার অক্সিজেন লেভেল কমে গিয়েছিল। হাসপাতালে ডা. আতাউর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।

এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবনের শুরু ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরির বিষকন্যা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জলছবি চলচ্চিত্রের জন্য। প্রায় শতাধিক সিনেমার গল্প এবং চিত্রনাট্যর রচয়িতা তিনি। ১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন এটিএম শামসুজ্জামানের। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি।

এরপর একে একে ওরা এগারোজন, সূর্য দীঘল বাড়ি, লাঠিয়াল, অনন্ত প্রেম, যাদুর বাশি, রামের সুমতি, অশিক্ষিত, গোলাপি এখন ট্রেনে, ছুটির ঘন্টা, পুরস্কার, চাপা ডাঙ্গার বউ, দায়ী কে,  ম্যাডাম ফুলি, দোলনা, ভন্ড, চোরাবালি, মোল্লা বাড়ির বউ, শ্বশুর বাড়ি জিন্দাবাদ, খায়রুন সুন্দরী, নাচনেওয়ালি, বাংলার বউ, হাজার বছর ধরে, গেরিলা, ডাক্তার বাড়ি, দাদীমা সহ ব্যবসাসফল এবং নান্দনিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

খল চরিত্র হোক বা কমেডি সব জায়গাতেই নিজের দক্ষতা প্রমান করেছেন তিনি। একজন অভিনেতা হিসেবে বড় পর্দা এবং ছোট পর্দা দুই জায়গাতেই চুটিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। পেয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘একুশে পদক’। সেরা অভিনেতা, খল, প্বার্শ এবং কৌতুক অভিনেতা হিসেবে মোট ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই দেশ নন্দিত  অভিনেতা বেশকিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।

তবে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে, কাজ করতে চাইতেন সবসময়ই। শারীরিক অসুস্থতা এবং করোনা পরিস্থিতি উদয় হলে তার ভালোবাসার জায়গা মানে অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন তিনি। তার অনবদ্য অভিনয় এবং হাস্যমুখ আমাদের মাঝে এই গুনী অভিনেতাকে বাচিয়ে রাখবে অনন্তকাল।

Ad