এই বছরে ঢাকাই সিনেমার নাম্বার ওয়ান অভিনেত্রী মিম
আফজালুর ফেরদৌস রুমন
ইন্ডাস্ট্রির এক নাম্বার নায়িকা কি মিম!! সিনেমাপ্রমীদের কথা বাদই দিলাম যারা আমাদের দেশীয় সিনেমা নিয়ে টুকটাক খবরও রাখেন তাদেরকেও যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ২০২২ সালটি ঢাকাই সিনেমায় কোন অভিনেত্রী রাজত্ব করেছেন তিনি বা তারাও চোখ বুঝে যে নামটা উচ্চারণ করবেন সেটি বিদ্যা সিনহা সাহা মিম। চলচ্চিত্রের পালে পরাণ জুড়ানো যে হাওয়ার সুবাতাস বইছে এখন তার শুরু রায়হান রাফীর ব্লকবাস্টার হিট ‘পরাণ’ এর মধ্যে দিয়ে। এবং ‘পরাণ’ সিনেমাটির গল্প যাকে নিয়ে এগিয়েছে সেই অনন্যা চরিত্রে এক অবিশ্বাস্য এবং অভূতপূর্ব পারফরম্যান্স উপহার দেয়া মিম এবার রূপালী পর্দায় হাজির হয়েছেন সত্তর দশকের এক তরুনী হাসনা হিসেবে। এবং এই মাল্টিস্টারার সিনেমাতেও মিম নিজের ছাপ রেখেছেন বেশ সাবলীলভাবেই।
ক্যারিয়ারে বেশকিছু হিট এবং প্রশংসিত সিনেমা থাকলেও ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রী হিসেবে মিমের পূর্ণজন্ম হয়েছে ‘পরাণ’ এর মাধ্যমে। এবং চিরাচরিত নিয়ম বা প্রথার বাইরে যেয়ে সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে গ্রে শেডের চরিত্রে মিম যে চমকে দিয়েছেন সবাইকে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বানিজ্যিক সিনেমার একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবে মিমের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট যেমন ‘পরাণ’ তেমনি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘দামাল’ সিনেমাতেও সুঅভিনয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন মিম বেশ দুর্দান্ত ভাাবেই।
‘দামাল’ এর ট্রেলারে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে প্রশংসনীয় এবং নজর কাড়া দৃশ্য ছিলো ঘৃনা, রাগ, ক্ষোভ জড়ানো অভিব্যক্তির শতভাগ ধারণ করা মিম যখন একটি দা দিয়ে কাউকে বারবার কোপ দিচ্ছেন এবং একদলা থুতু নিক্ষেপ করেন। ট্রেলারে এই দৃশ্য দিয়েই লাইমলাইটের আলোর বেশিরভাগ অংশ নিজের দিকে টেনে নেয়া মিম পুরো সিনেমাতেই উজ্জ্বল আলো ছড়িয়েছেন নিজের দক্ষ অভিনয়, মানানসই লুক, কস্টিউম, অসাধারণ স্নিগ্ধ রূপের ঝলকানিতে। প্রেমিকা থেকে স্ত্রী তথা বাড়ির আর্দশ বউ হিসেবে যেমন তার চরিত্রটি ডেভেলপ হয়েছে তেমনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে একজন দেশপ্রমী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও মানিয়ে গেছেন চমৎকারভাবে। এবং পাকিস্তানি ক্যাম্পে আটকা পড়া সত্ত্বেও মনোবল এবং দেশপ্রেম বুকে ধারণ করা এক সাহসী এবং অবিচল নারী হিসেবেও মিম ছিলেন অনন্য। পাশপাশি ’পরাণ’ দিয়ে আলোচনায় আসা মিম-রাজ জুটিও এই ‘দামাল’ সিনেমায় নিজেদের কেমেস্ট্রি দিয়ে আলাদা একটা রিলেট করার জায়গায় গিয়ে গেছেন আমাদের মানে সাধারণ দর্শকদের।
চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে মিম এই সময়ের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে যেমন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তেমনি সামনের দিনেও এই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখতেই ‘অন্তর্জাল’, ’ইত্তেফাক’ নামের দুটি ব্যতিক্রমী সিনেমাতেও দেখা যাবে মিমকে। ক্যারিয়ার দ্বিতীয় বার নতুন করে শুরু করার সুযোগ সবার আসেনা। আবার আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বিবাহিত নায়িকা যারা বিয়ের পরেও সফল হয়েছেন সেই লিস্টেও মিম নিজের নাম লিখিয়েছেন শক্তভাবেই। সেই দিক থেকে চিন্তা করলে মিম ভাগ্যবতী অভিনেত্রী নিঃসন্দেহে। তবে ভাগ্যের সাথে সাথে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার তাগিদ থেকেই ভিন্নধর্মী গল্প এবং চরিত্রে সামনের দিনে তাকে দেখবো আমরা সেটাই প্রত্যাশা। অভিনন্দন এবং শুভ কামনা রইলো মিমের এই সাফল্য ভরা বছরটির জন্য…..