‘মায়া শালিক’ দিয়ে ভক্তদের আক্ষেপ মেটালেন অভিনেতা অপূর্ব

আফজালুর ফেরদৌস রুমন 

সিনিয়র চঞ্চল চৌধুরী, ইন্তেখাব দিনার এবং মোশাররফ করিম ওটিটিতে রীতিমতো হইচই ফেলে দিচ্ছেন একের পর এক। অন্যদিকে সমসাময়িক আফরান নিশো তো নিজের ভার্সেটালিটির প্রমাণের সাথে সাথে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। আবার শ্যামল মাওলা, মনোজ প্রামাণিকও কাজ করে ফেলেছেন বেশকিছু নান্দনিক ফিকশনে। পিছিয়ে নেই পরের প্রজন্মের খায়রুল বাসার, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সোহেল মন্ডল বা ইয়াশ রোহানরা। কিন্তু টেলিভিশনে এই সময়ের রোমান্টিক কিং খ্যাত অভিনেতা অপূর্ব যেনো সেই তুলনায় ওটিটিতে একটু পিছিয়ে ছিলেন। সাধারণ দর্শকদের পাশপাশি তার ভক্তদের এটা নিয়ে হয়তো কিছুটা আক্ষেপও ছিলো এতোদিন। তবে অপূর্ব তার ভক্তদের সেই আক্ষেপ মেটালেন সম্প্রতি বিঞ্জ’এ রিলিজ পাওয়া শিহাব শাহীনের ওয়েবফিল্ম ‘মায়া শালিক’ এর অভি হিসেবে স্ক্রিনে অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার জানান দিয়ে।

একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে, এই সময়ে দাঁড়িয়ে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে রোমান্টিক ঘরানার গল্পে সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে অপূর্বর প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি নিজেই। তবে একই ঘরানার কাজে তাকে নিয়মিত দেখতে দেখতে অনেকের মাঝেই কিছুটা আক্ষেপ বা বিরক্তি এনে দিয়েছিলো। তবে সাইন্স ফিকশন এবং রোমান্টিক ঘরানার মিশ্রণে ‘মায়া শালিক’ এর ভিন্নরকম গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপের সাথে পুরোপুরি তাল মেলানো অপূর্বর অভিনয় নিয়ে প্রশংসা না করার জায়গা নাই। সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর লেখক হিসেবে কিছু একটা লেখার প্রবল ইচ্ছা শীল অভি হোক, বা সারার সাথে ফোনে প্রেম গড়ে উঠার সময়কার প্রাণোচ্ছল এক প্রেমিক অথবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া গান পাগল তরুন। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আমরা ভিন্ন ভিন্ন অভিকেই স্ক্রিনে দেখেছি। তার লুক, বডি ল্যাংগুয়েজ, বা গেটআপ সবকিছুই ছিলো আপ টু দ্যা মার্ক। অভি চরিত্রে যে সাবলীল এবং সহজাত অভিনয় দক্ষতা প্রদর্শন করলেন তিনি সেটা তার ভক্তের বিশেষ করে এই সময়ের তরুনীদের কাছে যে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ইতিমধ্যে এই ওয়েবফিকশনটি মাত্র নয়দিনে এক কোটি মিনিটের বেশি সময় ধরে দেখা হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘বিঞ্জ’।

পাশাপাশি এই প্রজন্মের অন্যতম সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানের সাথে কেমেস্ট্রি কতোটা জমে সেটা নিয়ে একটা দ্বিধা থাকলেও স্ক্রিনে দুজনকে দেখতে অসাধারণ লেগেছে। বহুদিন পরে রোমান্টিক নতুন একটি জুটির দেখা পেলাম আমরা। ব্যতিক্রমী এই গল্পে অভি এবং সারার প্রেম দেখে মুগ্ধ হননি এমন কাউকে খুজে পাওয়া যাবেনা। এখন এখানে দ্বিমত থাকতেই পারে যে, অপূর্ব তো রোমান্টিক ঘরানার কাজই বেশি করেন তাহলে ‘মায়া শালিক’ এর এই জনপ্রিয়তা নিয়ে এতো কথার কি আছে?!!

এখানে কথার বিষয়টা আসছে কারন ওটিটিতে অপূর্বর এই জনপ্রিয়তাটা এতোদিন মিসিং ছিলো। হয়তো কিছুটা নিজের কমফোর্ট জোনের কাজই এটা তবে সেই চরিত্রে নানা রকম।লেয়ার আমরা দেখেছি তা স্যাটিসফাই করেছে ওটিটির দর্শকদের এটাই অভিনেতা অপূর্বর বড় প্রাপ্তি। আরেকটা বিষয় উল্লেখ না করলে নয় যে, এর আগে ‘ট্রল’ এবং ‘নিহত নক্ষত্র’ ফিকশনেও রোমান্টিক ঘরানা থেকে বের হয়ে পুরোপুরি ভিন্ন অপূর্বর দেখা আমরা পেয়েছি। সেখানেও মুগ্ধতাই ছড়িয়েছিলো অপূর্ব। তাই ভালো গল্প, মানানসই চিত্রনাট্য, মেকিং পেলে অপূর্ব যে ভিন্নধর্মী ঘরানাতে নিজের দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারেন সেটা বলাই যায়। দেখা যাক সামনের দিনে আমাদের গল্পকার এবং নির্মাতারা বিনোদনের এই নতুন এবং তুমুল জনপ্রিয় মাধ্যমে অভিনেতা অপূর্বকে কতোটা কাজে লাগাতে সক্ষম হন!!

Ad